ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

ধানমন্ডিতে বিশৃঙ্খলা, তুহিনকে শোকজ করবে যুব মহিলা লীগ

প্রকাশ: ২০২১-১২-১৭ ২২:০৭:০৭ || আপডেট: ২০২১-১২-১৭ ২২:০৭:০৭

সিএসবিটুয়েন্টিফোর ডেস্কঃ

বিজয় দিবসে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিশৃঙ্খলার অভিযোগে সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিনকে শোকজ করবে যুব মহিলা লীগ।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনায় তাকে শোকজ করা হচ্ছে বলে শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার জানিয়েছেন। তবে তুহিন দাবি করেছেন, ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনও সম্পৃক্ততা নেই। সংগঠন থেকে বের করে দিতে সভাপতি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাচ্ছে।

শুক্রবার বিজয় শোভাযাত্রা সফল করতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেদিন (বৃহস্পতিবার) দায়িত্বে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাদের কাছ থেকে ঘটনা শোনেন কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে নেতারা টেলিফোন করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে যুব মহিলা লীগকে নির্দেশনা দেন।

জানা গেছে, বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তারের অনুসারীদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীদের ঝামেলা হয়। কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার অভিযোগ—প্রটোকল অনুযায়ী সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির পরে ঢাকা মহানগরসহ অন্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন।

কিন্তু ওই দিন ঢাকা উত্তরের সভাপতি তুহিন নেতাকর্মীদের নিয়ে আগেই ফুল দিতে চলে যান। তাকে বারবার সরে যেতে বলা হলেও তিনি তা মানেননি। উল্টো তার কর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপরে হামলা করেন। সংগঠনের ভাবমূর্তির কথা চিন্তা করে বিষয়টি নিয়ে আমরা কোনও কথা বলিনি, জানান নেতারা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাবিনা আক্তার তুহিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আগে ফুল দিতে যাইনি। আমরা ওখানে দাঁড়িয়েছিলাম আগে থেকেই। প্রতিবারই কেন্দ্রীয় কমিটির জন্য আমরা এরকম জায়গা দখল করে রাখি। কিন্তু ভীড় বেশি হওয়ায় তাদের জায়গা করে দিতে পারিনি। পরে নাজমা আপা আমাকে বের করে দিয়েছেন।’ নাজমা আক্তার নিজেই তার শরীরে আঘাত করেছেন বলেও তিনি দাবি করেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘আমি জেনেছি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেননি। তারা ওই দিন কী হয়েছিল তার ভিডিও ফুজেট দেখে সার্বিক বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। আমি নিজেও চাই ভিডিও ফুটেজ দেখে কারা কারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমি জড়িত হলে যে শাস্তি দেয় মাথা পেতে নেবো। আর অন্যরা জড়িত হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আমি নিজেই যুব মহিলা লীগ ছেড়ে চলে যাবো।’

আসন্ন সম্মেলনে প্রার্থী হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলেও দাবি করেন তুহিন।

বিজয় শোভাযাত্রা শেষে তুহিনকে শোকজের চিঠি ইস্যু করা হবে জানিয়ে যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন নিয়ে সে (তুহিন) বিশৃঙ্খল আচরণ করেছে। মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের দিনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে এটা করা অন্যায়। আওয়ামী লীগের নেতারা সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের কাছে বিষয়টি শোনার পর তুহিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমাকে বলা হয়েছে।’ নাজমা আক্তার বলেন, ‘কালকের (শনিবার) পর তাকে শোকজ দেওয়া হবে।’

নাজমা আক্তার বলেন, ‘আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করিনি। আওয়ামী লীগ নেতারা সিসি টিভির ফুটেজ ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলে আমাকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তারা বলেছেন, অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তুমি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নাও। বহিষ্কারের জন্য শোকজ করবো। তার কোনও জবাব থাকলে সে দেবে।’

ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত হলে ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ছিল। আমরা সেই ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেবো। তবে আমি নিজেই দেখেছি, অনেকেই তুহিনের আক্রমণ থেকে বাঁচতে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছেন।’

সিএসবিটুয়েন্টিফোর ১৭/১২-ড,