ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

এইচআইভি এইডসের ভ্যাকসিন আবিস্কার!

প্রকাশ: ২০১৩-০৯-১৫ ০৬:৩৫:২৬ || আপডেট: ২০১৩-০৯-১৫ ০৬:৩৭:০৫

সিএসবি ডেস্ক, ১৫ সেপ্টেম্বর ॥ বানরের বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার সাথে মানুষের মিল আছে। এর ফলে যেমন প্রায়ই এদের মাঝে একই ধরণের অসুখ বিসুখ দেখা যায়, তেমনই এসব অসুখের প্রতিকার বা ভ্যাকসিন পরীক্ষা করে দেখার কাজেও বানর জাতীয় প্রাণীদের ব্যবহার করা হয়ে থাকে প্রতিনিয়তই।
সম্প্রতি বানরে দেখা যাওয়া এর সমতুল্য এক ধরণের ভাইরাস ধ্বংসের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে একটি ভ্যাকসিন। আশা করা হচ্ছে মানুষের ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার করা যাবে।
Nature জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় জড়িত ছিলেন অরিগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির ভ্যাকসিন অ্যান্ড জিন থেরাপি ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক লুইস পিকার। অনেকটা HIV এর মতই এই SIV (Simian Immunodeficiency Virus) কিন্তু এটি প্রায় ১০০ গুণ বেশি মারাত্মক। এই গবেষণায় ১৬টি বানরের ওপর ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হয় এবং এর পর তাদেরকে SIV দিয়ে আক্রন্ত করা হয়।
দেখা যায়, SIV তে আক্রান্ত বানরদের দুই বছরের মাঝে মারা যাবার কথা। কিন্তু ভ্যাকসিন দেবার পর নযটি বানরের মাঝেই এই রোগটি বিস্তার করতে পারে নি এবং এদের শরীর থেকে ভাইরাসের সংক্রমণ দূর হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক পিকার বলেন, “সম্পূর্ণভাবে ভাইরাসমুক্ত হয়েছে কিনা এটা বলা মুশকিল। কারণ আমাদের দৃষ্টির অগোচরে অন্তত একটি কোষে থেকে যেতে পারে ভাইরাসের সংক্রমণ। কিন্তু খুব কঠোর মানদন্ডের ভিত্তিতে বিচার করে দেখার পর আমরা বলতে পারি যে ওই বানরগুলোর শরীরে কোনও ভাইরাস অবশিষ্ট নেই”।

সাইটোমেগালোভাইরাস নামের আরেকটি ভাইরাস ব্যবহার করে এই ভ্যাকসিনটি তৈরি করা হয়। এই ভাইরাসটি সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে কিন্তু কোনও রোগ তৈরি করে না বরং এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে SIV এর আক্রমণ প্রতিহত করতে সাহায্য করে। “এটি শরীরের কোষগুলোতে অনেকটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতো কাজ করে”, বলেন অধ্যাপক পিকার।

দেখা যায়, প্রথমে SIV এর ভাইরাসগুলো শরীরে বিস্তার লাভ করতে থাকে কিন্তু এই ভ্যাকসিনের প্রভাবে শীঘ্রই তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। যেসব বানরের শরীরে এই ভ্যাকসিন কাজ করেছিল, তাদের শরীর প্রায় তিন বছর পরেও থাকে SIV থেকে নিরাপদ। তবে এই ভ্যাকসিনটি সবগুলো বানরের ওপর কাজ করেনি বলে চিন্তিত বিজ্ঞানীরা। “এটা হতে পারে যে, ঝওঠ এর রোগ সৃষ্টির ক্ষমতা এতটাই বেশি যে এর চাইতে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব নয়। এটা একটা চলমান যুদ্ধের মতো যেখানে অর্ধেক সময় ভ্যাকসিনটি যুদ্ধে জেতে এবং বাকি অর্ধেক সময় যুদ্ধে হারে,” বলেন অধ্যাপক পিকার।
এখন তারা পরীক্ষা করে দেখছেন SIV দ্বারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত বানরদের ওপর এটি কাজ করবে কি না। এছাড়া এটি মানুষের ওপরে প্রয়োগের ব্যাপারেও পরিকল্পনা চলছে। তবে তার আগে দেখতে হবে এটি মানুষের জন্য যথেষ্ট ঝুঁকিমুক্ত কি না। সব দিক দিয়ে নিরাপদ প্রমাণিত হলে আগামী দুই বছরের মাঝে মানুষের ওপরে এই ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করা যাবে।