ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিদ্যুৎ বিভ্রাট

প্রকাশ: ২০১৪-১০-১৬ ১৫:৪৯:১৭ || আপডেট: ২০১৪-১০-১৬ ১৫:৪৯:১৭

চাহিদার চেয়ে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ হলেও বিদ্যুৎ ঘাটতিতে ভুগছে দেশ। রাজধানী ঢাকাতেও চলছে বিদ্যুৎ আছে বিদ্যুৎ নেই খেলা। গ্যাস সংকটের কারণে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সব সার কারখানায় উৎপাদন মৌসুমে গ্যাসের এক উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যবহৃত হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ হ্রাস পেয়েছে। ফলে সাময়িকভাবে হলেও বিদ্যুৎ ঘাটতি অনিবার্য হয়ে উঠেছে। বর্তমান সরকারের প্রায় ছয় বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। তবে এ সময়ে চাহিদাও বেড়েছে বিপুলভাবে। জরুরি ভিত্তিতে নির্মিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সবগুলোই গ্যাসভিত্তিক হওয়ায় সার উৎপাদন মৌসুমে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে দেশে গ্যাস উত্তোলন বেড়েছে ৬০ কোটি ঘনফুট। তবে একই সময়ে চাহিদা বেড়েছে আরও দ্রুতগতিতে। দেশের স্থলভাগে নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত না হওয়া পর্যন্ত উৎপাদন আর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বর্তমান সরকারের আমলে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়েছে। নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চেষ্টা চলছে। বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে বেশ কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বড় আকারের এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে একদিকে যেমন বিদ্যুৎ সংকট নিয়ন্ত্রণে আসবে তেমন গ্যাসনির্ভরতাও হ্রাস পাবে। তবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু হতে আরও কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে। সরকারি হিসাবেই দেশে এ মুহূর্তে চাহিদার চেয়ে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। তবে বেসরকারি হিসাবে চাহিদার তুলনায় তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ থাকা সত্ত্বেও সরবরাহ লাইনের ত্রুটির কারণেও লোডশেডিং অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। বিদ্যুতের সঙ্গে উৎপাদন ব্যবস্থার সম্পর্ক এখন একটি সুবিদিত সত্য। কলকারখানাই শুধু নয়, কৃষি উৎপাদনও বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। বিদ্যুতের অভাবে জনজীবন কী দুর্বিষহ অবস্থার শিকার হয় তা সহজে অনুমেয়। সরকারের বিদ্যুৎ নীতির সাফল্যকে স্বীকার করেও আমরা বলব দেশের অগ্রগতির স্বার্থে এ সমস্যা সমাধানে আরও মনোনিবেশ করতে হবে। কয়লাভিত্তিক ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দিকেও দিতে হবে বাড়তি নজর।