ঈদ-উত্তর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
প্রকাশ: ২০১৪-১০-০৯ ২১:২৭:০৮ || আপডেট: ২০১৪-১০-০৯ ২১:২৭:০৮
নাগরিক সহযোগিতা জরুরি
সড়কপথে, এমনকি হাসপাতালের সামনেও কোরবানির পশুর হাটের ইজারা দিয়ে নাগরিক ভোগান্তির উপলক্ষ তৈরি করে দিয়েছিল রাজধানীর সিটি করপোরেশন। তবে ঈদ-উত্তর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দুই সিটি করপোরেশনের কর্মযজ্ঞ এবার কিছুটা হলেও আশা জাগাল। কোরবানির পশুর বর্জ্য অন্যান্য বছরের মতো যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে নেই। প্রায় সব এলাকায়ই দ্রুততম সময়ে মোটামুটি পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। তবে কোনো কোনো স্থানে ঈদের পরের দুই দিনও পশু কোরবানি দান, সংকীর্ণ সড়ক ও অলিগলিতে বর্জ্য ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলে রাখা এবং কোরবানিদাতাদের অসচেতনতা ও অসহযোগিতার কারণে ঘোষিত সময়ে বর্জ্য পুরোপুরি অপসারণ সম্ভব হয়নি। এবার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, বর্জ্য নির্ধারিত স্থানে ফেলায় উৎসাহিত করতে বিশেষ পলিব্যাগ কোরবানিদাতাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে। বাস্তবে তার দেখা মেলেনি; বরং উদ্যোগটি নিয়ে ‘বাণিজ্য’ হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্বার্থে কোনো কোনো দেশে নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশু বেচাকেনা বা জবাই করতে হয়। তবে বিভিন্ন গোষ্ঠীর স্বার্থে আমাদের দেশে হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হয় ঢালাওভাবে। অন্যদিকে কোরবানির পশু জবাই করা হয় অলিগলিতে ও রাস্তায়। নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য না ফেলে যেখানে-সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখে সবাইকে চলে যেতে দেখা যায়।
জনাকীর্ণ ঢাকার নাগরিক যন্ত্রণার অন্যতম কারণ হয় এই বর্জ্য। অনেক স্থানে খোদ সিটি করপোরেশন ডাস্টবিন রাস্তার মাঝখানে ফেলে রাখে। এগুলো যানজট, সেই সঙ্গে অসুখবিসুখেরও কারণ হয়।
যত্রযত্র ময়লা ফেলে নাগরিকরাও কি শহর নোংরা করছেন না? কর্তৃপক্ষ কোরবানির বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার অনুরোধ জানিয়েছিল- কজন তা মেনেছেন? আশা করব, সিটি করপোরেশন ভবিষ্যতে স্থায়ী, সুদূরপ্রসারী নকশা নিয়ে এগোবে এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনাটিকে নিয়মে বাঁধবে। ব্যক্তি মানুষ সচেতন হলে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উন্নত দেশগুলোর অনুসরণে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে পরিচ্ছন্ন ঢাকায় আমরা একদিন বুকভরে শ্বাস নিতে পারব।