ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

জঙ্গিবাদের হুমকি

প্রকাশ: ২০১৪-০৮-১৮ ১৬:৫২:৩৫ || আপডেট: ২০১৪-০৮-১৮ ১৬:৫২:৩৫

নঈম নিজাম::
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যর্থতায় এই বিপদ থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত রাখা যাচ্ছে না। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলার মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিয়েছিল জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা। সিরিজ বোমা হামলার ১৬১টি মামলার মধ্যে ৫৯টির বিচার এখনো সম্পন্ন হয়নি নয় বছর কেটে যাওয়ার পরও। উপরন্তু চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি জঙ্গিরা ময়মনসিংহের ত্রিশালে কমান্ডো স্টাইলে পুলিশ খুন করে প্রিজন ভ্যান থেকে তিন জঙ্গিকে মুক্ত করে নিয়ে গেছে। জঙ্গিরা জেল থেকেও যে বাইরে যোগাযোগ রাখছে এবং সে যোগাযোগের ফলশ্রুতিতেই যে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছে, তা দিবালোকের মতোই স্পষ্ট। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্টের সিরিজ বোমা হামলায় দুজনকে হত্যা এবং দুই শতাধিক মানুষকে আহত করে জেএমবির জঙ্গিরা। এ পর্যন্ত এ সংক্রান্ত ১০২টি মামলার রায়ে আদালত ৪৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১১৮ জনের যাবজ্জীবন, ৯৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন। অন্যদিকে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে ১১৮ জন খালাস পেয়েছেন। বিভিন্ন মামলা থেকে ৩৫ জন জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলেও বাকি ৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড এখনো কার্যকর হয়নি। দণ্ড থেকে বাঁচতে তারা ইতিমধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। অন্যদিকে সিরিজ বোমা হামলাসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ৬৪ জন শীর্ষ জঙ্গি পলাতক থেকে জেএমবিকে সক্রিয় করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। ২০০৭ সালে শীর্ষ ছয় জঙ্গি নেতার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর আর কারও ফাঁসি কার্যকর করা যায়নি। আবার বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৩৫ জন ইতিমধ্যেই খালাস ও জামিন পেয়েছে। এ মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক রয়েছে প্রায় এক হাজার জঙ্গি। কারাগারে বসেই শীর্ষ জঙ্গিরা তাদের অনুসারীদের পরিচালনা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে পুলিশ সদস্য এবং কারাগারের দুর্নীতিবাজ সদস্যদের ম্যানেজ করে তারা তাদের দিকনির্দেশনা পাঠিয়ে দিচ্ছে অনুসারীদের কাছে। ফলে জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের অঙ্গীকার মাঠে মারা যাচ্ছে। জঙ্গিবাদ ঠেকাতে উদ্বুদ্ধকরণের পদক্ষেপ না থাকায় এ হুমকিকে কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। গণতন্ত্র চর্চার অভাব অসহিষ্ণুতাকে উৎসাহিত করছে এবং তা প্রকারান্তরে জঙ্গিবাদকে লাভবান করছে। এ বিপদ ঠেকাতে দেশের সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা আজ সময়ের দাবি।