ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

মাঝে-মধ্যে বিদ্যুৎ এসে জানায় এখনো মরি নাই: গয়েশ্বর চন্দ্র

প্রকাশ: ২০২২-০৭-২৮ ১০:২০:৫২ || আপডেট: ২০২২-০৭-২৮ ১০:২০:৫২

সিএসবি-টুয়েন্টিফোর ডেস্কঃ

বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের শ্বেতপত্র প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এখন বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে-মধ্যে আসে। বিদ্যুৎ বলে আমি জীবিত আছি এখনো মরি নাই।

তিনি বলেন, এই সরকারের উন্নতি শেষ পর্যন্ত ঘরে ঘরে মোমবাতি। এই সরকার ঘরে ঘরে জনগণের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে। বিদ্যুৎ নাই তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে টাকা গেল কোথায়? বিদ্যুতের জন্য যে টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ করা হয়েছে, লুট করা হয়েছে- এর দায়ভার তো জনগণকে পরিশোধ করতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে বিদ্যুৎ পাবো না তাহলে আমরা সেই ঋণ পরিশোধ করবো কেন?

বুধবার (২৭ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, যে সব কোম্পানিকে কুইক রেন্টাল বেসিসে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন তাদেরকে ব্যাংক থেকে কত টাকা ঋণ দিয়েছেন? তাদের কত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা ছিল, কতটুকু তারা করতে পেরেছে, কতটুকু সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে- তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। জনগণের সেই হিসাব চাওয়ার অধিকার আছে।

নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) তীব্র সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন ঠাট্টা-মশকরা করার জায়গা। সকালে এক কথা বিকেলে আরেক কথা বলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে এরইমধ্যে হার মানিয়ে দিয়েছেন বর্তমান সিইসি। যার কাজ সে করবে, সিইসি এতো কথা বলেন কেন?

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরো বলেন, কে নির্বাচনে আসবে কে আসবে না- তাতে কিছু আসে যায় না। এতো দায়িত্ব আপনাদের (নির্বাচন কমিশন) দেয় নাই । হু আর ইউ? তুমি কে এই কথা বলার। রাজনৈতিক সমস্যার মীমাংসা হবে রাজনৈতিকভাবে। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন- সরকার চিন্তা করবে কীভাবে তারা জনগণের সঙ্গে মীমাংসা করবে। কীভাবে জনগণের পথ ফেরত দেবে সেই বিষয়। এই কাজ ঠুঁটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের নয়। আমি আশা করবো নো টক (কোনো কথা নয়)।

তিনি বলেন, যতদিন দায়িত্বে আছেন চুপচাপ বসে থাকেন, বেতন ভাতা খান। নির্বাচন, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল, গণতন্ত্র নিয়ে ছবক দেওয়ার অধিকার সাংবিধানিক এই পদে বসে আপনাকে কেউ দেয় নাই। আশা করি বাংলা কথাটা বুঝতে আপনার কষ্ট হবে না। আমরা যা করবো রাজপথে ফয়সালা করবো, যা বলেছি, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে যাবো না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তার বাড়ি ঘেরাও করতে গেলে তিনি ছাদে আপ্যায়ন করাবেন। আপনার বাড়ি যদি কখনো কেউ ঘেরাও করতে যায় চায়ের জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন ততটুকু মজুত আছে তো? নাই। চায়ের দাওয়াতের জন্য নয়, যদি এদেশের জনগণ কখনো গণভবন ঘেরাও করতে যায় তাহলে আপনার জিনিসপত্র গুছিয়ে গাড়িতে তুলে দিতে যাবে।

তিনি বলেন, গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন খালেদা জিয়াকে ‘টুস করে ফেলে দেওয়া’ এটা একান্তই মশকরা। অর্থাৎ শেখ হাসিনা ঠাট্টা করতেও জানেন। ঠাট্টা খালেদা জিয়ার সঙ্গে করেন, কিন্তু জাতির সঙ্গে যেটা মশকরা শুরু করেছেন ১৪ বছর ধরে- এর হিসাব একদিন না একদিন জনগণের কাছে দিতেই হবে।

অর্থমন্ত্রীকে আদম ব্যাপারি আখ্যা দিয়ে গয়েশ্বর বলেন, উনি বলেন আইএমএফের কাছে টাকা চাওয়া হয়নি। পত্রিকায় দেখলাম ভিতরে ভিতরে আবার তাদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। আর আইএমএফ বলেছে আপনারা কোন খাতে কত টাকা ব্যয় করেছেন তার একটা হিসাব দেন।

তিনি বলেন, নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান হচ্ছে জনগণের ভোট জনগণ দেবে, যাকে খুশি তাকে দেবে, দিনের ভোট দিনে দেবে। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে ভোট দেবে। একটা ফয়সালা করতে হবে রাজপথে। এর জন্য আমাদেরকে সেভাবেই এগোতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান। আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিশেষ সম্পাদক ডক্টর আসাদুজ্জামান রিপন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব প্রমুখ।