‘নৌকায় ভোট দিলে কেন্দ্রে আসবেন, না হয় অপমানিত হবেন’
প্রকাশ: ২০২২-০৭-২১ ১৫:০০:৩৪ || আপডেট: ২০২২-০৭-২১ ১৫:০০:৩৪
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী সালাহ উদ্দিন চৌধুরী জাবেদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। তার অনুসারীরা সাধারণ ভোটার ও প্রতিদ্বন্দ্বী আলতাফ হোসেন খানের (ঘোড়া) এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। প্রতিদ্বন্দ্বীর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও প্রচারকাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
এসব অভিযোগ প্রার্থী আলতাফ হোসেনের। এ বিষয়ে বুধবার (২০ জুলাই) দুপুরে ঢাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। বিষয়টি রিটানিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ১১টি কার্যালয়েও জমা দেওয়া হয়েছে।
জেলা শহরের মাদাম এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি নিজেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান প্রার্থী আলতাফ হোসেন খাঁন।
গত ১৪ জানুয়ারি দিঘলীর ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন মারা যান। ২৭ জুলাই সেখানে উপ-নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে নৌকার প্রার্থী সালাহ উদ্দিনের পক্ষে লক্ষ্মীপুর পৌরসভা, সদর ও চন্দ্রগঞ্জ থানার সিনিয়র নেতারা গণসংযোগ ও প্রচারণায় নেমেছেন।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সালাহ উদ্দিনের পক্ষে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু গণসংযোগ করেছেন। বুধবারও লক্ষ্মীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ আহম্মদ পাটওয়ারীসহ একদল বহিরাগত নেতাকর্মী প্রচারণায় অংশ নেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী আলতাফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সালাহ উদ্দিন জাবেদ দলীয় ৫০-৬০ জন ক্যাডার নিয়ে মঙ্গলবার তার দিঘলী বাজারে নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালান। এ সময় কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর ও তার দুই কর্মীকে মারধর করা হয়।
এর আগে মাইক ভাঙচুর ও প্রচারণায় বাধা দেওয়া হয়। সালাহ উদ্দিনের সহযোগীর সাধারণ ভোটার এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্টদের বাড়িতে যাচ্ছেন। তারা পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছেন। বলছেন, তাদের সাফ কথা—‘নৌকায় ভোট দিলে কেন্দ্রে আসবেন, না হয় অপমানিত হবেন’। নির্বাচনে স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের আহ্বান জানান এ প্রার্থী।
আলতাফ হোসেন খাঁন বলেন, ‘প্রার্থী জাবেদ ও তার ক্যাডারদের ভয়ে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। পৌরসভা ও সদরের অন্তত ১০টি ইউনিয়ন থেকে বহিরাগত লোকজন প্রতিদিনই তার পক্ষে প্রচারণা করছেন। নৌকায় ভোট না দিলে অপমানিত হতে হবে বলে তারা হুমকি দিচ্ছেন। অভিযোগগুলো লিখিতভাবে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালাহ উদ্দিন চৌধুরী জাবেদের মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি কেটে দেন। পরে খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি। তবে তার ভাগিনা পরিচয়দানকারী কৃষক লীগ নেতা মাকসুদুল করিম মামুন দাবি করেন, অভিযোগগুলো বানোয়াট। নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতেই এমনটি করা হচ্ছে।
সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ইউপি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভৌমিক বলেন, এ পর্যন্ত প্রার্থী আলতাফ হোসেন খানের তিনটি আলাদা অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে অভিযোগগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন। অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিএসবি-টুয়েন্টিফোর; ২১/৭ঃঅ/৯৮(স+০০১১০)