ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

হলদিয়াপালং ইউনিয়ন আ’লীগের সম্মেলন ২২ জুলাই, হাইব্রিড-বিদ্রোহীরা পদ পেতে মরিয়া

প্রকাশ: ২০২২-০৭-১৯ ০০:৫১:১৯ || আপডেট: ২০২২-০৭-১৯ ০১:৩১:৩১

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দীর্ঘ ১৬ বছর পর কক্সবাজারের উখিয়া হলদিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এনিয়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে ইতিমধ্যে যে যার মতো লবিং, তদবির শুরু করেছেন।

আসন্ন ২২ জুলাই মরিচ্যায় অনুষ্ঠিতব্য হলদিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে চলছে চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ।

সংশ্লিষ্ট এলাকা ঘুরে এবং নোতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল ও সম্মেলনে সভাপতি পদে ২জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ২জন প্রার্থীতা করবেন।

এদের মধ্যে একজন গত ১৩ বছর ধরে যিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দলের কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন মোহাম্মদ ইসলাম মেম্বার।

তিনি নিজেকে জনপ্রিয় দাবী করে বলেন, আমি গত ১৩ বছর দলকে ঘুছানোর চেষ্টা করেছি। হলদিয়াপালং ইউনিয়নে আ’লীগের অবস্থান আগের চেয়ে অনেক ভালো। যা আমি দায়িত্ব নেয়ার পর দল ঘুছানোর কাজ করেছি। তবে আমার প্রতিপক্ষ অত্যন্ত প্রভাবশালী। তিনি নৌকার বিদ্রোহী চেয়ারম্যানের মা।

তিনি বলেন, যে কোন মুহুর্তে আমাকে গুম করে ফেলতে পারে। থানায় জিডির প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস কাউন্সিলররা যদি সুষ্ঠু ভাবে ভোট দিতে পারে তাহলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো। ইনশাল্লাহ।

একই পদে প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ নির্বাচন করে সভাপতি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন আশরাফ জাহান কাজল। নারীর ক্ষমতায়ন এবং প্রভাব-প্রতিপত্তি সব মিলিয়ে তাকেও পিছিয়ে রাখেনি দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। কেউ কেউ বলছে ইউনিয়ন পর্যায়ে সফল হলে তিনি উপজেলার নেতৃত্বে কিংবা সংসদ সদস্য হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

তাছাড়া তিনি সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরীর সহধর্মীনি এবং হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীর মা। যিনি আ’লীগের মনোনয়ন না পেয়ে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রার্থীতা করার ঘোষণা দিয়েছেন শাহজাহান সাজু।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দীর্ঘ ২৭ বৎসর ধরে ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রেখে নিজ দলের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতেও জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে ২০৪১ সাল বাস্তবায়নে হলদিয়াপালং ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছি। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। ইনশাল্লাহ।

তার বিপরীতে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহজান চৌধুরী। প্রার্থীতার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

তবে তার ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কাউন্সিলার বলেছেন, গত হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া সাবেক শিবিরকর্মী সাধারণ সম্পাদক পদ বাগিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমেও তার বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরের সাবেক নেতা বলে জনশ্রুতি আছে।

এদিকে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২২ জুলাই সম্মেলনের দিন ধার্য্য করা হয়েছে। সম্মেলনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা-কর্মীদের অভিযোগ নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে অবস্থান নেয়াসহ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে জড়িতরা কখনো দলের জন্য কল্যাণকামী নয়। এরা নিজেদের স্বার্থে দল করে।

এছাড়াও মেম্বার শাহজাহান চৌধুরী বিরুদ্ধে নিজের পিতা এবং ভাই-বোনদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতার অভিযোগ রয়েছে। এরকম ব্যক্তি দলের জন্য কখনো নিরাপদ নয়।

তাদের অনেকে বলছে, বিদ্রোহী এবং হাইব্রিডদের দখলে থাকায় ত্যাগী নেতাকর্মীরা বারবার অবহেলিত হচ্ছে। দলের অধিকাংশ কর্মসূচিতে তারাই প্রাধান্য পাচ্ছেন। আর ত্যাগী নিষ্ক্রিয় থাকায় দলের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রয়া বিরাজ করছে। তারা দলের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেছেন, ইতোমধ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দিন তারিখ ধার্য্য হয়েছে। মরিচ্যা উত্তর স্টেশনে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হলদিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন সম্পন্ন হবে।