ঢাকা, শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

৫ সেকেন্ডের মধ্যে পকেট থেকে মোবাইল ফোন হাওয়া করতে পারেন তিনি

প্রকাশ: ২০২২-০৫-২০ ০৯:০২:১৬ || আপডেট: ২০২২-০৫-২০ ০৯:০২:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সংবাদ সম্মেলন করার সময় মুঠোফোন ও নগদ টাকা হারিয়েছিলেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার। এটা গত ২৩ এপ্রিলের কথা। ঈদুল ফিতরের অগ্রিম টিকিট বিক্রি নিয়ে ছিল এ সংবাদ সম্মেলন। সেই পরিবেশে তাঁর পকেট থেকে মোবাইল ফোনের দুটি সেট, একটি ওয়ালেট এবং ৪৫ হাজার টাকা চুরি হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ ঢাকা মহানগর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে এই চোর চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

অভিযান তদারকি কর্মকর্তা ডিবি গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান এসব তথ্য জানান।

জিজ্ঞাসাবাদে এসব ব্যক্তি বলেছেন, কীভাবে মুহূর্তের মধ্যে তাঁরা মুঠোফোন পকেট থেকে চুরি করতে পারেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এসব চুরি যাওয়া ফোন কীভাবে বিক্রি করতেন। আর কেমন করে এসব কাজে তাঁদের ‘দক্ষতা’ তৈরি হলো, তাও বিশদভাবে বলেছেন ডিবিকে।

এ চক্রের মূল হোতা আজিজ মোহাম্মদ। সঙ্গে আরও গ্রেপ্তার হয়েছেন রনি হাওলাদার ও মো. জাকির হোসেন। গ্রেপ্তার এসব আসামির কাছে থেকে তথ্য নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশন, গুলিস্তান গোলাপশাহের মাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৭টি উন্নত মানের চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ ঘটনাটির ছায়া তদন্ত করতে থাকে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল মঙ্গলবার চোর এবং চোরাই মাল ক্রেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজিজ মোহাম্মদ স্বীকার করেন, তিনি

সুকৌশলে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে স্টেশন ম্যানেজারের ফোন এবং ওয়ালেট চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যান। তিনি সৌদি আরবে ছিলেন দীর্ঘদিন। সেখানে তিনি ইমামের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন মালিকের গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে কাজ করতেন। ড্রাইভিংয়ের কাজ করতে করতে তাঁর গাড়ি চুরির নেশা হয় তাঁর। তিনি দামি গাড়ি চুরি করতে শুরু করেন।

সৌদি আরবে ২০১৫ সালে গাড়ি চুরির মামলায় সৌদি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হন। তাঁর তিন বছরের সাজা হয়। সাজা ভোগ করে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে এসে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থেকে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষাকতা শুরু করেন। পরে মাদ্রাসায় মোবাইল চুরি করে ধরা পড়লে তাঁর চাকরি চলে যায়। এরপর তিনি ঢাকায় চলে আসেন।

আজিজ জানান, একটি মোবাইল চুরি করতে মালিকের গতিবিধি লক্ষ করে মাত্র চার থেকে পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে মালিকের পকেট থেকে তুলে নিতে পারতেন তিনি। মোবাইল ফোন চুরি করে সেগুলো রনি হাওলাদার ও ফকিরাপুলের জাকিরের কাছে দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করতেন।

জাকির চোরাই মোবাইলগুলো কিছুদিন তাঁর হেফাজতে রেখে লক ভাঙা, আইএমইআই পরিবর্তন করে শহরের সাধারণ মানুষের কাছে এবং বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন।

আজিজ মোহাম্মদ স্বীকার করেন, তিনি তিন বছর যাবৎ রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন, ঢাকা মেডিকেল, টিএসসি চত্বর, নগর ভবন, গুলিস্তান, ধানমন্ডি লেক, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি সপ্তাহে ৮ থেকে ১০টি মোবাইল চুরি করতেন।

। সিএসবি-টুয়েন্টিফোর;২০/৫ঃ(অ+২১)