
# পতিতাবৃত্তিসহ জড়াচ্ছে নানা অপরাধে।
# ফের সক্রিয় মানবপাচারকারী চক্র।
# ক্যাম্প প্রশাসন ও এনজিওদের দুষছেন স্থানীয়রা।
# সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকি স্থাপন জরুরী।
পলাশ বড়ুয়া:
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালানোর সময় আজও ১২৮জন আটক করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। এ নিয়ে গত চারদিনে নারী-শিশুসহ ৬০০জন রোহিঙ্গা পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। এদের মধ্যে ৪৮জন নারী রয়েছে।
ক্যাম্প প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা বের হলেও পুনরায় ক্যাম্পে ফিরে আসে না। এদের কেউ কেউ সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বড় একটা অংশ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে যাচ্ছে। যার ফলে খুন, অপহরণ, মাদকসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। এমনটি মনে করছেন সুশীল সমাজ।
এদিকে বুধবার (৬ মার্চ) সকালে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে রাজাপালং ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয় এমনটি জানিয়েছেন উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, আটক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
তিনি এও বলেন, মানবপাচারের জড়িত থাকার অপরাধে ৬জন আটক করে মামলা রুজু করেছে। যার মামলা নম্বর-১৯। পলাতক আছে আরো ৭/৮জন।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহাম্মদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, এর আগে মঙ্গলবার ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় উখিয়া স্টেশনের আশেপাশে অভিযান চালিয়ে ৮০জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে এসব রোহিঙ্গাদের কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়।
একই ভাবে ৪ এপ্রিল ক্যাম্প থেকে পালানোর সময় উখিয়া থানা পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ১৮৪জন রোহিঙ্গা নাগরিকসহ ৬ দালালকে আটক করে। একইদিনে টেকনাফ থানা পুলিশ ৫০জন রোহিঙ্গাকে আটক করে।
এছাড়াও ২১ মার্চ কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপে মালয়েশিয়াগামী ট্রলার থেকে ১০০ রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশ। ২৫ মার্চ টেকনাফের বাহারছড়া উপকূল থেকে ৫৪জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ শিশুকে আটক করা হয়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের আশ্রয় দিলেও এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। ক্যাম্প কেন্দ্রিক সেনাবাহিনীর কার্যক্রম এবং তল্লাশী চৌকি বসানো দরকার। এটা তুলে নেয়া ঠিক হয়নি।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কোন স্থান নেই। ফলে স্থানীয় মানুষের অধিকার এবং স্বার্থ রক্ষার প্রসঙ্গে কথা বলার মানুষ নেই। যা সরকারি দলের মানুষ হিসেবে লজ্জাজনক ব্যাপার।
হামিদ আরো বলেন, রহস্যজনক কারণে ক্যাম্প প্রশাসন এবং যারা তদারকি করছে দেশি-বিদেশী এনজিও গুলোর নিজেরা বোঝাপড়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণের সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
একাধিকবার ফোন করেও রিসিভ না করায় রোহিঙ্গা ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের কারো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ৮-এপিবিএন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: কামরান হোসেন জানিয়েছেন, ক্যাম্পের কিছু কিছু স্থানে কাটাতার নষ্ট হয়ে গেছে। সেই ফাক ফোকর দিয়ে তারা বেরিয়ে যাচ্ছে। এসব কাটাতার সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবর ইতোমধ্যে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।
পাশাপাশি এনজিও এবং খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম কাটাতারের বাইরে হওয়াতে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন স্থানে যাওয়া-আসা করা সহজ হচ্ছে।
তারপরও কাটাতারের বাইরে আমাদের হাতে আটক রোহিঙ্গাদের নিয়মিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি প্রদাণের ব্যবস্থা করা হয় বলেও তিনি জানান।
পাঠকের মতামত