ডেস্ক রিপোর্ট।। ‘বাজারে দুই লিটার তেলের দাম ৪০০ টাকা আর টিসিবির ট্রাকে একই জিনিস ২২০ টাকায় পাওয়া যায়। স্বামী রিকশাচালক, তিন সন্তানসহ খাওনেওয়ালা মোট পাঁচজন। চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা ও পেঁয়াজসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দাম। একজনের রোজগারে পাঁচজনের সংসার চালানোর দায় হয়ে পড়েছে। এ কারণে টিসিবি থেকে অপেক্ষাকৃত সস্তা দামে তেল ও চিনে নিতে এসেছি।’
সোমবার মধ্যদুপুরে রাজধানীর আজিমপুর ছাপড়া মসজিদের অদূরে সকাল থেকে টিসিবির ট্রাকের জন্য অপেক্ষমাণ রিকশাচালকের স্ত্রী নিলুফা বেগম প্রতিবেদককে ঠিক এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব তার সংসারে পড়েছে বলে জানান তিনি।
সকাল সাতটা থেকে টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ৭০ বছরের বৃদ্ধ হোসেন আলী। তিনি আবাসিক ভবনের নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি করেন।
তিনি জানান, মাসে ৮ হাজার টাকা বেতন পান। স্ত্রী—সন্তান গ্রামের বাড়িতে থাকে তাই নিজে রান্না করে খান। টিসিবির পণ্য কেনার জন্য আজ ছুটি নিয়েছেন। সকাল থেকে অপেক্ষা করলেও দুপুর ১টা পর্যন্ত টিসিবির পণ্য বাইরে ট্রাক না আসায় হতাশ তিনি। শুধু নিলুফা বেগম ও বৃদ্ধ হোসেন আলী নন, তাদের মতো আরও অনেকেই টিসিবির ট্রাক আসার অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার প্রহর গুনতে দেখা যায়।
রসুলবাগের বাসিন্দা মধ্যবয়সী জাহানারা বেগম জানান, তিনি টিসিবির পণ্য কেনার জন্য নিয়মিত এলেও প্রায় দিনই কয়েকশো মানুষের পেছনে পড়ে পণ্য না পেয়ে বাড়ি ফেরেন বলে জানান।
তিনি অভিযোগ করেন, সাধারণ মানুষের জন্য সরকারের এই উদ্যোগ ভালো হলেও অধিকাংশ সময় স্থানীয় নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা লাইন ছাড়াই পণ্য সংগ্রহ করে থাকেন। এক্ষেত্রে ভিন্ন পদ্ধতি চালু করা যায় কিনা সে ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
বেশ কয়েকদিন টিসিবির পণ্য বিক্রি বন্ধ থাকার পর রোববার ৬ মার্চ থেকে নবম দফায় টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য বিক্রি হলেও চাহিদার তুলনায় তা খুবই কম বলে অপেক্ষমাণ লোকজন জানান।
সকাল থেকে দুপুর অবধি দাঁড়িয়ে থেকেও টিসিবির টাকে দেখা না পেয়ে রাস্তার অপর প্রান্তে লাইনে দাঁড়িয়ে আরও অনেককে ওএমএসের চাল ও আটা কিনতে দেখা যায়। কেউ টিপসই দিয়ে আবার কেউবা স্বাক্ষর করে চাল—আটা কিনে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
ওএমএসের পণ্য বিক্রেতা জানান, প্রতিদিন ৬০০ জনকে চাল ও ৩৩৩ জনের কাছে আটা বিক্রি করে থাকেন। জনপ্রতি ৫ কেজি চাল ও তিন কেজি করে আটা দেওয়া হয়।
পাঠকের মতামত