
মোঃ হাবিবুর রহমান, নওগাঁ:
নওগাঁর মান্দা উপজেলার কুসুম্ভা ইউনিয়নের জন্মসনদে ইউপি সচিবের হয়রানি ও জন্মনিবন্ধন ফি বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইউপি সচিব রফিকুল ইসলাম নিজের ইচ্ছা মতো নিচ্ছে জন্মনিবন্ধন ফি। চাহিদা মতো টাকা না দিলে করছে হয়রানি এমনটি ভুক্তভোগীদের।
আইন অনুযায়ী শিশুজন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। দুই বছরের মধ্যে জন্মনিবন্ধন না করালে বাবা-মায়ের জন্য জরিমানার বিধানও আছে।
আর এই সময়ের মধ্যে নিবন্ধনে শিশুদের জন্য কোনো ফি নেওয়া হয় না। তবে জন্ম ও মৃত্যুর দুই বছর পর নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রতি বছরের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ৫ টাকা ও সিটি করপোরেশন বা পৌর এলাকায় ১০ টাকা হারে ফি দিতে হবে বলে অাইন অাছে । জন্ম বা মৃত্যু সনদের মূল বাংলা বা ইংরেজি কপি সরবরাহে আলাদা কোনো টাকা লাগবে না।
সম্প্রতি বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন আর সিআরভিএস ব্যবস্থার আলোকে শিক্ষার্থীদের অনলাইন ডাটাবেজ প্রণয়ন ও তথ্য সংগ্রহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক তথ্যফরম প্রদান করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ প্রাপ্তির তাগিদ দেন।
যদিও করোনা পরিস্থিতির কারণে এ কার্যক্রম গত কয়েক মাস আগে শিক্ষা মন্ত্রাণলয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে, স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা পূর্বের নির্দেশনার আলোকে জন্মনিবন্ধন পেতে শিক্ষার্থী আর অভিভাবকরা গত ১১ মে থেকে আজ-অবদি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে ভিড় জমাচ্ছেন। এই সুযোগে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব নিম্নে দেড়শ থেকে উর্দ্ধে তিনশ টাকা কোন ধরনের রশিদ ছাড়া সনদ প্রদানের নামে আদায় করেছেন।
এরপরও ইউনিয়নের ট্যাক্স ও কর বকেয়া থাকলে কোন সনদ ও সেবা প্রদান করা হচ্ছে না। নাগরিকদের এভাবে জিম্মি করে শুধু অর্থ বাণিজ্য নয়, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হয়রানি করছে।
এনিয়ে কুসুম্বা ইউপির আকবর আলী, ওহাব সরদার, ধীরেন দত্ত, পূর্ণিমা রাণীসহ ১০ থেকে১৫ জন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা বলেন, তাদের পরিবার ও ছেলে মেয়ের অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ পরিষদ থেকে দুবছর আগে উত্তোলন করে, সম্প্রতি ছেলে ও মেয়ের স্কুল থেকে বাংলা ও ইংরেজি অনলাইন জন্মসনদ চাওয়া হয়। কিন্তু তাদের ওই জন্মসনদ শুধু বাংলায় ছিল। ফলে সংশোধনের জন্য পরিষদে যান তারা। এ সময় সচিব পরিষদের সার্ভার জটিলতায় দোহাই দিয়ে জন্মনিবন্ধন আবেদন ও সংশোধন করা হচ্ছে না বলে জানান। এরপরও ইন্টারনেটের কাজের জন্য দক্ষ অপারেটর নেই।
এব্যাপারে কুসুম্বা ইউপি সচিব রফিকুল ইসলাম জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক জন্মনিবিধন ফি নেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু কুসুম্ভা ইউপি চেয়ারম্যান নফেল অালী মন্ডলের মোবাইলে একাধিবার ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এনিয়ে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অাব্দুল হামিদ বলেন, জন্মনিবন্ধন প্রদানের ক্ষেত্রে কোন অর্থ নেয়া আর হয়রানি করা যাবে না। জন্মসনদ পেতে ট্যাক্স ও কর পরিশোধের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। পরিষদেও সংশ্লিষ্টরা জনগণকে সেবার নামে হয়রানি করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাঠকের মতামত