পলাশ বড়ুয়া::
কক্সবাজারের উখিয়ায় তথ্য গোপন করে রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম সনদ বানিয়ে স্কুলে ভর্তি করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে খোদ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন উখিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক মো: আনিসুল ইসলাম।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ফরিদুল আলম। তিনি রাজাপালং ইউনিয়নের বটতলী কোনারপাড়া এলাকার মৃত ওলা মিয়ার ছেলে।
অভিযোগে প্রকাশ, ২০০৯ সালে টেকনাফের নয়াপাড়া মোছনী রেজি: ক্যাম্পে ঠিকাদারী করতে গিয়ে ওই ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নুর মোহাম্মদের মেয়ে সাহেদা বেগমকে বিয়ে করে। যার ঔরসে এহেসানুল আলম আকাশ নামে এক সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের ৬ বৎসর পর রোহিঙ্গা নারীকে তাড়িয়ে দিলেও তার গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানকে ফরিদ কৌশলে প্রথম স্ত্রী হাফছা খানম শারমিনকে মা দেখিয়ে জন্ম সনদ নিয়ে বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেয়। সে এখন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
অভিযোগে আরো প্রকাশ, ফরিদ ও প্রধানশিক্ষক যোগসাজসে বিদ্যালয় ছুটির পরে ক্যাচমেন্ট এরিয়ার বাহিরের শিক্ষার্থীদেরকে বিপুল অর্থের হাতিয়ে নেওয়া হয়। যার কারণে ক্যাচমেন্ট এলাকার প্রকৃত শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পায় না। এছাড়াও অবৈধ ভাবে রোহিঙ্গা নারী বিয়ে এবং তার গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানের জন্ম সনদে মাতৃত্বের পরিচয় থেকে বঞ্চিত করায় চরম মানবাধিকার লঙ্গন হয়েছে।
আনিস বলেন, উখিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি ফরিদুল আলম এর আগেও ২ মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এক মেয়াদের জন্য তার স্ত্রীকে সভাপতি নির্বাচিত করা হলে পরে আবারও উপজেলা সদরের মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভাপতির পদ দখলে নিতে রোহিঙ্গা নারীর গর্ভে জন্ম নেয়া শিশুর তথ্য গোপন করেছে ফরিদ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ফরিদুল আলম বলেন, বিষয়টি সত্য নয়। অভিযোগকারী আমার অংশীদারীত্বের সামাজিক বনায়নে জায়গা দখল করায় বন বিভাগ তাকে নোটিশ দেয়াকে কেন্দ্র করে আমাকে হয়রানি করার কুমানসে এসব করছে।
এ বিষয়ে উখিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুণ অর রশীদ বলেন, ফরিদুল আলম একজন রোহিঙ্গা নারী বিয়ে করার বিষয়টি তিনি শুনেছি। তবে স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে যথা নিয়মে জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং অভিভাবকের জাতীয় পরিচয় পত্র নিশ্চিত করা হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুব্রত কুমার ধর বলেন, উখিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ফরিদুল আলমের নামে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
পাঠকের মতামত