প্রকাশিত: ২৫/০৫/২০২০ ৭:৪৬ অপরাহ্ণ , আপডেট: ২৫/০৫/২০২০ ৯:২৮ অপরাহ্ণ
ধর্মান্তরের কারণ, কুফল এবং ধর্মান্তর রোধে করণীয়!

✍ বড়ুয়া নোবেল সিকদার, ফ্রান্স থেকে…
মুসলিম প্রধান দেশ বাংলাদেশ। এখানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যায় খুব নগন্য। এই ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর সাথে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সাথে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে উঠা স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় মুসলিম ধর্মের ছেলেমেয়ের সাথে বৌদ্ধদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠতে। সাধারণত বয়সন্ধিকালে এ বিষয়টি বেশ চোখে পড়ে,বিশেষত: কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কর্মস্থলে।

ধর্মান্তরের কারণঃ-
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
ইংরেজিতে একটা কথা আছে, Youth is the best time of life অর্থাৎ তারুণ্য হল জীবনের সর্বোৎকৃষ্ট সময়। এই সময়টা খুব বেশি আবেগের। তাই তারুণ্যে সন্তানকে যথা যথভাবে পথপ্রদর্শন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা এই সময় শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের প্রবণতা প্রবল থাকে। বিশেষ কারণে যেসব ছেলেমেয়েরা ধর্মান্তরিত হয় সেগুলো আমি নিম্নে বর্ণনা করছি।

১.প্রেম-ভালোবাসা ও নর-নারীর সম্পর্ক যেটা সব থেকে বড় ব্যাধি ও মারাত্মক আপদ।

২. ছেলে মেয়েদের প্রকৃত বুদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতা।

৩. পিতা মাতার সাথে সুসম্পর্ক না থাকা বা বন্ধু সুলভ সম্পর্ক না থাকা।

৪. অভিবাবকদের ধর্মীয় জ্ঞান না থাকায় সন্তানদের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রশ্নে উত্তর দিতে না পারা ফলে সন্তান নিজ ধর্ম সম্পর্কে ভুল চিন্তায় নিমগ্ন হওয়া।

৫. সন্তানের চলাফেরা খেয়াল না রাখা। যার ফলে সন্তান কু-পথে গেলেও বুঝতে না পারা।

৬. সন্তানকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, গান-বাজনা, নাচ, আবৃত্তি চর্চায় আগ্রহ রাখলেও ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে হীন করে দেখে শিক্ষার ব্যবস্থা না করা।

৭. সন্তানকে সকল ধর্ম সমান বলে শিক্ষা দেওয়া যা কখনো উচিত নয়। অষ্ট বিংশতি বুদ্ধদের হিসেব অনুসারে পৃথিবী সৃষ্টির প্রথমেই বুদ্ধ ধর্মের সৃষ্টি যা বর্তমানে কালের বিবর্তনে সংখ্যাঘরিষ্টতায় বিশ্বের চতুর্থ অবস্থানে আছে। যে ধর্মীয় শাস্ত্র সর্ব জীবের প্রতি মৈত্রী, করুণা ও উপেক্ষার কথা বলেছেন, যেই ধর্ম সকল প্রানীর মুক্তির পথ দেখিয়েছেন এবং মানুষকে সুপথে প্রতিপন্ন হতে পঞ্চ নীতির শিক্ষা দিয়েছেন সেই ধর্মের সমান অন্য কোন ধর্ম কখনো নয়। সেই বিষয়ে প্রকৃত ধারণা না থাকা।

৮. বৌদ্ধদের অনেকে মাজার পূজা, বিভিন্ন দেবদেবির পূজা ধর্মান্তরিত হওয়ার আর একটি কারনও বটে। বুদ্ধ ধর্মে এত অর্হৎ ও গুণী ভিক্ষু থাকার পরও যখন পিতামাতারা মাজার নিয়ে পড়ে থাকে, যাত্রাপথে মাজার টাইপের কিছু দেখলেই করজোড়ে প্রণাম করে তখন সন্তানরা সাধারণ ভাবেই ভাবতে বাধ্য হয় বুদ্ধ ধর্মের ভিক্ষুরা মনে হয় পূজার অযোগ্য তাই আমার বাবা মা আজ মাজারে মানত, প্রণাম করে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। তাহলে আমার বুদ্ধ ধর্ম তো সত্যিই ভুয়া ধর্ম যা বন্ধুরা বলেছেন।

৯.পরিবারের সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত থাকা এটাই একটি কারণ। অনেক পরিবারে দেখা যায় বাবা-মা খুব শিক্ষিত। তারা ছেলে-মেয়েদের সুশিক্ষিত করতে জীবনের অর্জিত সমস্ত অর্থ ব্যয় করে কিন্তু ধর্মীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে তাদের কোন উৎসাহ ও চেতনা নেই। যদি পিতামাতার ধর্মীয় চেতনায় কোন ভক্তিই না থাকে তাহলে তারা সন্তাদের কিভাবে ধর্মীয় শিক্ষা দিবে?

প্রত্যেক পিতামাতার উচিত অন্যান্য শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া। তাদের বিহার মুখি করা। বাড়িতে সকাল সন্ধায় রীতিমতো প্রার্থনায় মনোনিবেশ করা। স্কুল, কলেজ কিংবা ইউনিভার্সিটিতে সন্তানেরা অন্যধর্মের কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখা। অন্য তায় নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ভুল পথে পা বাড়াতে দ্বিধাবোধ করেনা।

১০.সমাজের কিছু বিত্তবানদের দেখা যায় শহরে হোক বা নিজ গ্রামে হোক ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে উনাদের তেমন উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় না। চাকরী কিংবা ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার অজুহাতে উনারা অনেক সময় এর দায় এড়িয়ে যায়। আমি মনে করি এসব অজুহাত না দেখিয়ে পারিবারিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় অনুষ্টানে শত ব্যস্ততা থাকা সত্বেও সময় করে ছেলেমেয়েদেরকে সাথে নিয়ে অংশগ্রহণ করা এবং পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় শিক্ষাদান দেওয়াই উত্তম। কেননা, সময়ের সাথে সাথে সব মানুষেরই ব্যস্ততা বাড়ছে, তাই মা বাবার দেখানো পথেই সন্তানেরা চলবে। সময়ের অজুহাতে যখন বাবা মা এড়িয়ে যাবে তা দেখে সন্তানদের মনেও সে ধারণা পোষণ করে। তাই ছোটকাল থেকেই পারিবারিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় আচার আচরণে উদ্বুদ্ধ করে সুন্দর ও সৎ জীবনধারণের শিক্ষা দেওয়াটা খুবই গুরুত্ববহ। আর তা নাহলে বয়সন্ধিকালে পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় শিক্ষার অভাব এবং যথাযথভাবে পথপ্রদর্শন আর সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে সন্তান ভুল সম্পর্কে জড়িয়ে ভুল পথে পা বাড়াতে এবং বাবা, মা, আত্মীয় স্বজন ও জাতির সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে লোভ ও কামের বশবর্তী হয়ে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে বিবেকে বাঁধে না।

১১. গার্মেন্টসে যারা চাররি করে তাদের সংগ দোষে অর্থাৎ অন্যান্য ধর্মালম্বী বন্ধুদের প্রেমে পড়ে তাদের প্ররোচনায় ও উৎসাহে।

ধর্মান্তরের কুফলঃ-
============
মানব জন্ম বড়ই দুর্লভ তার চেয়ে মহা দুর্লভ বৌদ্ধ পরিবারে জন্ম নেয়া। যেখানে বুদ্ধের শাসন এখনো বিদ্যমান। প্রব্রজিত জীবনলাভ করা দুর্লভ, বুদ্ধ উৎপন্ন হওয়া দুর্লভ, মনুষ্য জীবন লাভ করা দুর্লভ, শ্রদ্ধা জাগ্রত হওয়া দুর্লভ, সদ্ধর্ম শ্রবণ করা দুর্লভ। আমরা দুর্লভ মনুষ্য জন্ম লাভ করে একটা দুর্লভ বিষয় লাভ করেছি। সুতরাং পরবর্তী দুর্লভ বিষয় গুলোও লাভের চেষ্টা করতে হবে। তাহলে দুর্লভ মনুষ্য জন্ম লাভ করা যেমন সার্থক হবে, তেমনি সকল দুর্লভ বিষয় লাভের গৌরবময় অর্জনের অধিকারী সমর্থ হব।

পক্ষান্তরে দুর্লভ মনুষ্য জনম লাভ করে যদি পরবর্তী দুর্লভ বিষয়ের সন্ধান না করে শুধুমাত্র ভোগ বিলাসের ভ্রান্তির ভিতর দিয়ে জীবনের দিনগুলো ক্ষয় করি, তাহলে দুর্লভ মানব জন্ম বিফলে রূপান্তরিত হবে। ধর্মের ছয় গুন সম্পর্কে তথাগত ভগবান সম্বুদ্ধ বলেছেন,
স্বাকখাতো ভগবাতা ধাম্মো,সন্দিটঠিকো,অকালিকো, এহিপস্সিকো, ওপানাযিকো, পচ্চত্তং বেদিতব্বো বিঞঞূহী’তি-গৌতম বুদ্ধের ধর্ম সুন্দর রুপে ব্যাখ্যাত,এই জন্মে ফলদায়ক, কালাকাল বিহীন,আসিয়া দেখার যোগ্য, নির্বানে লইয়া যায় এবং প্রত্যক্ষ বিজ্ঞগনের জ্ঞাতব্য অর্থাৎ জ্ঞানীর ধর্ম।

এই শ্লোকে তথাগত ভগবান বুদ্ধ সকল ধর্মকে বাতিল করে দিয়ে একমাত্র তার শরণাপন্ন হওয়ার আহ্বান করেছেন। কিন্তু আমরা কি করছি? ধর্মন্তরিত হয়ে মা-বাবাকে ডুবাচ্ছি। নিজে সহ ১৪ পুরুষ পর্যন্ত নরকে নিচ্ছি। বৌদ্ধ সমাজের অজ্ঞতা ও অসচেতনতাই এর মূল কারন তাই বুদ্ধ ধর্মের পিতা মাতাকে বলবো আপনি আপনার নিজ নিজ সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করুন এবং ধর্মান্তরের কুফল সম্পর্কে তাদের জানান, আর যেন একটি ফুল ও অকালে ঝরে না যায়, প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠে বুদ্ধকে বন্দনা করতে শেখান, নিজে করুন এবং সন্তানদের কে অনুপ্রাণিত করুন। সপ্তাহে পরিবার নিয়ে নিকটস্থ বিহারে যান। সকাল-সন্ধায় বন্দনা করুন। বুদ্ধের শরানাপন্ন হোন। ভান্তেদের সঙ্গে ধর্মীয় আলোচনা করুন। তাদের দেশনা শ্রবণ করুন। দেশনা শ্রবণে ধর্মের প্রতি চেতনা উৎপন্ন হয়। আপনারা স্বধর্ম ত্যাগ করে বড় পাপের বোঝা কাঁধে নিবেন না, যা প্রতিনিয়ত এহেন পাপের প্রায়শ্চিত্ত সারাজীবন বয়ে চলতে হবে।

ধর্মান্তর রোধে করণীয়ঃ-
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
বৌদ্ধধর্ম সম্পূর্ণই অনুধাবন যোগ্যধর্ম, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞার দ্বারা এ ধর্মের চর্চা, ধর্মীয় আচরণ যদি সঠিক অনুশীলনে পরিণত হয়, এর ব্যবহারিক ফল অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। সাধারণত ছোট বেলা থেকে সন্তানেরা মানবিকতার যে শিক্ষা পায় তা হচ্ছে পারিবারিক মূল্যবোধ থেকে, যেমন- পরিবারে সবাই একে অন্যকে সম্মান করা, সন্তানদের সাথে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করা, যাতে ওরা সব কিছু শেয়ার করে, সে রকম পরিবেশ তৈরি করা, ছোটদের ভাল কাজে স্বীকৃতি দেওয়া, এবং মন্দ কাজে ভুলগুলো ভাল উদাহরণ দিয়ে শুধরে দেওয়া, তাদের যথাযথ সময় দেওয়া, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা পালি টুল এবং সামাজিক ও ধর্মীয় কার্যক্রমের সাথে নিজেরা তথা সন্তানদেরকেও সম্পৃক্ত রাখা একান্ত প্রয়োজন। গ্রাম তথা শহরে প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে বাৎসরিক ধর্মীয় শিক্ষা বৃত্তি প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ধর্মীয় ক্লাসের আয়োজন করা ।

ধর্মান্তর রোধে “জাগো বুদ্ধ জাতি” নামকরণ করে সেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার মেয়ে ও মাতৃসম্প্রদায়কে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কারণ মেয়েরাই ভালবাসার দুর্নিবার আকর্ষনে অন্য ধর্মের ছেলেদের সাথে পালিয়ে যায়। মা-বাবা, ভাইবোন, আত্বীয় স্বজন, সমাজ, সম্মান, দুর্লভ বুদ্ধ ধর্ম এবং সবকিছুর মায়া মোহ ভুলে গিয়ে এই নির্লজ্জ বেহায়াপনা কাজ করতে একটুও কুণ্ঠিত হয় না। তাই মেয়েদেরকে খুব বেশি কড়া শাসনে শাসিত করতে হবে। বর্তমানে মোবাইল হচ্ছে বৌদ্ধ মেয়েদের সাথে ভিন্ন ধর্মের ছেলেদের রিলেশনের আরেকটি মহা মাধ্যম। মেয়েদের মোবাইল ব্যাবহারে পিতামাতার সব সময় গভীর সচেতনতা থাকতে হবে।

বুদ্ধ ধর্মীয় যেকোন অনুষ্টানে ধর্মীয় গুরুদের ধর্মান্তর বিষয়ে দেশনা প্রদান করতে হবে। ধর্মান্তর রোধ, বয়সন্ধিঃকালিন চাহিদা মেটাতে যারা ভিন্ন ধর্মালম্বীদের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সেখান থেকে তরুণ-তরুনীদের যথাযথ সচেতনা সৃষ্টি করতে হবে।
সকলের সমবেত চেতনায় এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে না তুলতে পারলে বৌদ্ধ জাতি সর্বনাশে তলিয়ে যাবে। জাগো হে বৌদ্ধ নর নারী আসুন সবাই মিলে ধর্মান্তর প্রতিরোধ করে নিজ সন্তানদের কুপথগামী থেকে রক্ষা করি। সমাজের নিম্ন- উচ্চবর্গের সবাই একাত্বতা ঘোষণা করি। প্রত্যকের সর্বাত্বক সহযোগীতার মাধ্যমে প্রত্যেক বিহারে বৈঠক করে বৌদ্ধ ছেলেমেয়েদের ধর্মান্তরিত হওয়া থেকে রোধ করি।

পরিষেশে বলব, প্রতিটি পরিবার যদি কোন বিদর্শন ভাবনা চর্চা কেন্দ্রের সাথে জড়িত থেকে তাদের সন্তানদের নিয়ে বিদর্শন ভাবনা চর্চায় অভ্যস্ত করে, তাহলে আমাদের নব প্রজন্ম ও উদ্বুদ্ধ হবে বিদর্শন ভাবনার প্রতি। বয়সন্ধিকালের শুরুতে যদি দুই তিনটি বিদর্শনের কোর্স চর্চা করি তাহলে সন্তানেরা প্রকৃত সত্যধর্ম জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। কেননা, “দুর্লভ মনুষ্য জন্মলাভ – সু দুর্লভ”।

বৌদ্ধধর্মের সারতত্ব হৃদয়ঙ্গম করতে পারলে আশাকরি ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রশ্নই উঠবেনা। পরিশেষে এটাই প্রত্যাশা করি, সবার মনে বুদ্ধ ধর্মের প্রকৃত চেতনা উৎপন্ন হোক। যুবক যুবতীদের সুস্থ মানসিকতার বিকাশ হোক !

জগতের সকল প্রাণী সুখি হউক। সদ্ধর্মের জয় হোক !

জয়তু বুদ্ধ সাসনম- বুদ্ধের শাসন চিরজীবী হউক।

সব্বে সত্ত্বা সুখিতা হোন্তু-জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।

পাঠকের মতামত