
রফিক মাহমুদ, সিএসবি২৪:
টেকনাফে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশে নোঙর করলে ৪ শতাধিক রোহিঙ্গাসহ জাহাজ আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সদস্যরা। জাহাজটিতে অনেক রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করছে জাহাজের যাত্রীরা। তারা সকলেই দালাল চক্রের হাত ধরে উন্নত জীবনের প্রত্যশায় মালয়েশিয়া যাত্রা করেছিল।
গত বুধবার ১৫ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুরের জাহাজ ঘাট থেকে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোস্ট গার্ড। তারা মালয়েশিয়া যেতে না পেরে পুন:রায় বাংলাদেশে ফেরত আসার চেষ্টা করেছিল। আটক বেশির ভাগ রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবিরে বাসিন্দা বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
জাহাজ থেকে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গা নাগরিক মোহাম্মদ জোবাইর জানিয়েছেন, গত দুই মাস পূর্বে দালালের হাত ধরে ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা নিয়ে একটি ট্রলারে করে তারা সাগর পথে মালয়েশিয়ার উদ্দ্যেশে রওয়ানা দিয়েছিল। ভাগ্যের নিমর্ম পরিহাস তারা স্বপ্নের সে দেশ মালেয়শিয়াতে করোনাভাইরাসের কারনে কড়াকড়ি থাকায় ঢুকতে না পেরে ফের বাংলাদেশে চলে আসার চেষ্টা চালায়। সাগরে এত দিন ভাসমান অবস্থায় ছিল। এই জাহাজে ৩৮২ জন রয়েছে। জাহাজে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। আমি ২৮ জনকে চোঁখের সামনে মরতে দেখেছি। মৃতদের সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি টেকনাফ নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকতাম। দালালের খপ্পরে পড়ে মালেয়শিয়া যেতে চেয়েছিলাম।
টেকনাফ স্টেশন কোস্ট গার্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা লে. কমান্ডার এম সোহেল রানা প্রতিবেদককে নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ভর্তি একটি বড় জাহাজ আমরা টেকনাফ জাহাজপুরা ঘাট এলাকা দিয়ে উঠার চেষ্টার সময় ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা যাত্রীসহ আটক করেছি। আমাদের ধারনা তারা বেশ কিছু দিন আগে সাগর পথে মালয়েশিয়ার উদ্দ্যশে যাত্রা করছিল। জাহাজটি সেখানে ভিড়তে না পেরে আবারও চলে আসে বাংলাদেশের দিকে। তবে জাহাজে রোহিঙ্গার সংখ্যা কম বেশি হতে পারে। উদ্ধার কার্যক্রম শেষে সটিক সংখ্যা জানা যাবে।
ডিজিএফআই কক্সবাজার প্রধান মেজর সাকির রোহিঙ্গা ভর্তি জাহাজ আটকের ঘটনার সতত্যা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বর্তমানে তাদেরকে ঘিরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। আটক হওয়া রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসালাম বলেছেন, মালয়েশিয়া ফেরত ৪শতাধিক রোহিঙ্গাকে কোস্টগার্ড আটক করেছে। তারা মালয়েশিয়া যেতে না পেরে বাংলাদেশে ফেরত আসেন। তাদের আগে এক জায়গায় জড়ো করা হচ্ছে। আটক হওয়া রোহিঙ্গাদেরকে স্থানীয়রা সাগর থেকে উদ্ধার করার জন্য সহযোগীতা করেছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ নারী ও শিশু রয়েছে। আটক রোহিঙ্গারা বেশির ভাগ উখিয়া-টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
পাঠকের মতামত