নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
মাদক চোরাচালানের আর্ন্তজাতিক রুট হিসাবে খ্যাত টেকনাফে আবারও ২১ মাদক কারবারি আত্মসমর্পণ করেছে। সোমবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে টেকনাফ কলেজ মাঠে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক এর কাছে তারা আত্মসমর্পন করেন।
এসময় যারা আত্মসমর্পণ করেন- টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ফুলের ডেইল গ্রামের ফকির আহমদের ছেলে নুর মোহাম্মদ, নুর কবিরের ছেলে ইমাম হোসেন, হোয়াইক্যং উত্তরপাড়ার মৃত আব্দুর শুক্কুরের ছেলে ফরিদ আলম, মহেশখালীয়াপাড়ার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে শাহাদাত হোছাইন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মৌলভী পাড়ার বাসিন্দা হাজী ফজল আহমদের ছেলে মোহাম্মদ রিদওয়ান ও তার ভাই আব্দুর রাজ্জাক, সুলতান আহমদের ছেলে বশির আহমদ, মৃত আমির হোসেনের ছেলে ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুল আমিন আবুল, মৃত লাল মিয়ার ছেলে আবুল কালাম, মৌলভীপাড়ার ছৈয়দ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ রাসেল ওরফে হাজি রাসেল, রুহল আমিনের ছেলে ফজল করিম, সাবরাং ইউনিয়নের লেজির পাড়ার মৃত হাজী মকতুল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইদ্রিস, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের উত্তর লম্বরী পাড়ার জহির আহমদের ছেলে আবু তৈয়ুব ওরফে মধু, মাঠপাড়ার ফজলুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ জাহেদ, খয়রাতি পাড়ার আবুল কালাম সওদাগরের ছেলে মোহাম্মদ সাদ্দাম, টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন পল্লান পাড়ার মৃত কামাল হোসেনের ছেলে আব্দুল নূর, লামার বাজারের আব্দুল জলিলের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাঈল, সাবরাং ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার মৃত ছৈয়দুর হোসেনের ছেলে আব্দুল গফুর, সাবরাং সিকদারপাড়া আমির হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন কালু, হ্নীলা ইউনিয়নের উলুচামোরি কোনারপাড়ার আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমান।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ আয়োজিত ও কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানের অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন অ্যান্ড ক্রাইমস) মো. জাকির হোসেন খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, কমিউনিটি পুলিশিং কক্সবাজার জেলা সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক এডভোকেট তোফায়েল আহমদ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ বাহাদুর, মুফতি মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ শফিক, টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস বিপিএম (বার) ও উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি নুরুল হুদাসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস বিপিএম (বার) জানিয়েছে- আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিদের কাছ থেকে ২১ হাজার পিস ইয়াবা, দেশীয় ১০টি এলজি, ৩০টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিদের মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে কক্সবাজার আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন জানান- সরকার মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ফলে মাদক নির্মূলে পুলিশ জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সোমবার বিকাল ৩টার দিকে টেকনাফ সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে মাদক ব্যবসায়ীদের আনা হয়। তাদের দেখতে শত শত মানুষ সেখানে ভীড় করেন।
উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৯ মাদক কারবারি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ছয় জন রোহিঙ্গা। এর আগে ২০১৮ সালের মে থেকে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় বিশেষ অভিযানে ৫৬ রোহিঙ্গাসহ ২০৯ জন ইয়াবা কারবারি ও ডাকাত-সন্ত্রাসী নিহত হয়।
গত বছর ১৬ ফেরুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করে। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে একজনের মৃত্যু হলে ১০১ জন আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ।
পাঠকের মতামত