
পলাশ বড়ুয়া ॥
রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে দীর্ঘদিন ২৯ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে জন্ম নিবন্ধন সার্ভার। খুলে দেয়ার সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এদিকে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সার্ভার বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই স্থানীয় জনগোষ্টির। নবজাতক শিশুর টিকার কার্ড, স্কুল ভর্তি, ব্যাংক, বীমা, ভোটার তালিকা হালনাগাদ সহ সবক্ষেত্রে প্রয়োজন হচ্ছে জন্ম নিবন্ধন সনদের।
জন্ম নিবন্ধন ছাড়া ছেলে-মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করাতে নানা ভোগান্তি পোহাতে স্থানীয়দের। তাদের একজন আদর্শ বড়ুয়া এবং কামাল উদ্দিন বলেন, ছেলে-মেয়েকে স্কুলে ভর্তি এবং বীমা করার জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য অনেক গেলেও সার্ভার বন্ধ বলে ফেরত আসতে হয়েছে।
সরকারের কিছু কিছু সিদ্ধান্তের কারণে বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্টিকে আশ্রয় দিয়ে এখন নিজেদের মান-মর্যাদা হারাতে বসেছে স্থানীয়রা। যেহেতু, ইউএন এজেন্সী বা সরকারি ভাবে ক্যাম্পে জন্ম নেয়া রোহিঙ্গা শিশুদের তথ্য সংরক্ষণ করলেও দীর্ঘদিন স্থানীয়দের জন্য জন্ম নিবন্ধন সার্ভার বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়দের জন্য সার্ভার খুলে দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে রোহিঙ্গা শিশুদেরও আলাদা জন্ম নিবন্ধন সার্ভার খোলা প্রয়োজনীয় মনে করেন হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম। এতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ঘরে জন্ম নেওয়া শিশুদের সঠিক পরিসংখ্যানটা থাকবে।
হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, অধ্যক্ষ শাহ আলম বলেন, আগামী দুয়েক সপ্তাহের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন সার্ভার খুলে দিতে পারে। তবে প্রয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রত্যয়ন পত্র দেয়া হয় বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন, কক্সবাজারে জন্ম নিবন্ধন সার্ভার খুলে দেয়ার সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক হয়নি এখনো। তবে শীঘ্রই খুলে দেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি জানান, কয়েক দফা চিঠি পাঠানোর পরে জন্ম নিবন্ধন সার্ভার খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়।
তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গাদের কথা মাথায় রেখে কক্সবাজারে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদানে কিছুটা কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। আগের মতোই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা সচিব সরাসরি জন্ম নিবন্ধন সনদ দিতে পারবেন না। উপজেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি আবেদনকারীদের জন্ম স্থান এবং জাতীয়তা যাচাই করে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। ফলে পুরনো রোহিঙ্গা সহ ১৫ লাখেরও বেশি তাদের সংখ্যা। আশ্রিত এসব রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করার জন্য বন্ধ করে দেয়া হয় কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলার অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম। ২৯ মাসেও সচল হয়নি জন্ম নিবন্ধন সার্ভার।
পাঠকের মতামত