
পলাশ বড়ুয়া ও গফুর মিয়া চৌধুরী:
এবার উৎসাহ-উদ্দীপনায় শারদীয় দূর্গা পুজা উদ্যাপন করতে যাচ্ছে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রিত হিন্দু রোহিঙ্গারা। ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট পরবর্তী মিয়ানমারের সামরিক জান্তার নির্যাতন-নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ থেকে প্রাণে বাঁচতে কক্সবাজারের উখিয়ায় আশ্রয় নেয় তারা। ১০১ পরিবারের প্রায় ৪১৮ জন হিন্দু রোহিঙ্গা উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কুতুপালংস্থ সরকারি বন বিভাগের জায়গার উপর তাদের আশ্রয় শিবির।
৩ অক্টোবর (বুধবার) দুপুরে কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের সন্নিকটে আরকান সড়কের পশ্চিম পার্শ্বে এসব অসহায় হিন্দু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেলে তাদের জীবন যাপন ও পুজামন্ডপ প্রস্তুতির চিত্র দেখা যায়।
এ সময় হিন্দু রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি সুমন্ত রুদ্র জানান, প্রশাসনের উদ্যোগে এবার হিন্দু শরণার্থী শিবিরে দুর্গাপুজা মন্ডপ হচ্ছে। এ নিয়ে সবার মাঝে খুশির আমেজ বিরাজ করছে। তবে তারা আক্ষেপ করে বলেন, চাহিদা অনুযায়ী রেশন সামগ্রী পেলেও নগদ অর্থের অভাবে চলতি মাসের পুজা উদ্যাপনে প্রয়োজনীয় নতুন কাপড়-চোপড় কিনতে পারছে না।
নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে মাঝি সুমন্ত রুদ্র ও মেগা শীলের ছেলে লেডু শীল সিএসবি’কে জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৪ ঘন্টা প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তারক্ষী নিয়োজিত থাকে। তবে পুজা উপলক্ষে বাড়তি নিরাপত্তার প্রয়োজন আছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে প্রশাসনের তদারকিতে পুজা মন্ডপের কার্যক্রম শুরু হয়েছে জানিয়েছেন।
আগামী ১৩ অক্টোবর পুজা মন্ডপ প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন হবে এবং ১৪ অক্টোবর থেকে পুজার আনুষ্টানিকতা শুরু হবে। প্রশাসনের সহযোগিতায় ১০জন হিন্দু শরণার্থী পুজা বিসর্জন দিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
হিন্দু রোহিঙ্গা নারী স্বরস্বতী ও দূর্গাশীল জানান, আমরা কোন রকম এখানে আশ্রয় নিয়েছি। নিজ দেশের বাপ-দাদার বসত ভিটায় ফিরে যেতে চাই। স্বদেশে পুজা উদযাপন করতে পারলে ভালো লাগত। এখানে সরকারি ভাবে পুজা উদযাপনের ব্যবস্থা করলেও টুকিটাকি খরচসহ নতুন কাপড় কেনার জন্য আমাদের হাতে কোন টাকা-পয়সা নেই। তাই হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গাপুজায় কতটুকু আনন্দ উদযাপন করতে পারি এখনো বুঝা যাচ্ছে না।
পাঠকের মতামত