মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া:
কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় আওয়ামীলীগের ২১ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেপ্তার এড়াতে আওয়ামীলীগের সিংহভাগ নেতাকর্মী এখন আত্মগোপনে। বিত্তশালীরা এলাকা ত্যাগ করে বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে ঘা ঢাকা দিয়েছেন। কয়েকজন পাড়ি দিয়েছেন বিদেশে। আর কিছু নেতাকর্মীরা দিনে নিজ এলাকার আশেপাশে থাকলেও রাতে আশ্রয় নিচ্ছেন অজানা স্থানে।সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার রাতে থানার অদূরে কাঁচাবাজার এলাকা থেকে র্যাব-১৫ এর একটি অভিযানিক দল গ্রেপ্তার করেছে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ন-সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জামাল উদ্দিন জয়নালকে। শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে জামাল উদ্দিন জয়নালকে ২০২৩ সালের একটি মামলায় আসামী দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনজুর কাদের ভূঁইয়া ও পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা মামলা ও আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর এই দুই উপজেলায় মামলা হয়েছে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৯টি। এসব মামলায় ২১ জনকে এই ৯টি মামলা ছাড়াও পুরনো কয়েকটি মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
আটকরা হলেন- চকরিয়া উপজেলার আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, চকরিয়ার ইউপি সদস্য এনামুল হক, ইউপি সদস্য মাহামুদুল করিম, মোহাম্মদ আসিফ, মোহাম্মদ এনাম, মোহাম্মদ শহিদ, নুরুল কবির, নুরুল মোস্তফা, মোহাম্মদ মুরশেদ, মোহাম্মদ মুরাদ, সাহাব উদ্দিন, আলী হোসেন, শেফায়েতুল ইসলাম, মোহাম্মদ বেলাল, মোহাম্মদ ইসমাইল, মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া ও ইরান বেগম।পেকুয়া আটকরা হলেন- ইউপি সদস্য মনজুর আলম, মোহাম্মদ হোসাইন, রহিম উল্লাহ ও জমির উদ্দিন।আটকদের হত্যা, হত্যাচেষ্টা, লুটপাট, মারামারিসহ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত দেখিয়ে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থাপন করলে বিজ্ঞ বিচারক তাদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিমধ্যে হত্যাসহ একাধিক মামলায় আসামি হওয়ায় এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওযামীলীগের সভাপতি জাফর আলম, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপি, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মূসা, ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর, বিএমচরের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউল আলম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাওছার উদ্দিন কচির, পেকুয়ার টইটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদারসহ দুই উপজেলার শতাধিক নেতাকর্মী।
আওয়ামীলীগের যেসব কর্মী এখনো এলাকায় রয়েছেন তাদের বিচরণও সীমিত। মাঝেমধ্যে এলাকায় দেখা গেলেও রাতে ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন।
অপরদিকে ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান। এই অভিযানে আটকের ভয়ে শুধু নেতাকর্মী নয় সমর্থক ছাড়াও তাদের পরিবার সদস্যরাও উদ্বেগ উৎকন্ঠা ও আতংকে ভুগছেন। প্রতি রাতেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কোন না কোন নেতাকর্মী-সমর্থকের বসত ঘরে হানা দিচ্ছেন। এতে ৫ আগষ্টের পূর্বে চকরিয়া-পেকুয়ায় আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয় থাকা সবাই দুশ্চিন্তায় দিনাতিপাত করছেন।###
পাঠকের মতামত