ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৪ ১০:৩২ পিএম

 

পালংখালী প্রতিনিধি :
এক সপ্তাহের ব্যবধানে কক্সবাজারের উখিয়ার ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় দুইশো ঝুপড়ি ঘরসহ ২৭৫টি স্থাপনা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পাশাপাশি স্থানীয়দের সাতটি বসতবাড়ি পুড়ে গেছে।

শনিবার (১ জুন) দুপুর একটার দিকে তাজনিমারখোলা ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁঠালগাছতলা বাজার এলাকায় ডি-১, ডি-২ ও ডি-৩ ব্লকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয়দের সাতটি ঘর পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে স্থানীয় ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিছবাহ উদ্দিন সেলিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বর্তমানে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

পালংখালীর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্থানীয় মানুষের সাতটি বাড়ি পুড়ে গেছে। তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক লাখ। জিনিসপত্র সব আগুনে পুড়ে যাওয়ায় তারা এখন পথে বসেছে।

এর মধ্যে তাজনিমারখোলার স্থানীয় মৃত আবুল হোসেনের স্ত্রী সাহারা খাতুনের বাড়ি, তার পার্শ্ববর্তী নবি হোসেন, সরওয়ার, ছৈয়দ আকবর, কাদির হোসেন, গিয়াস উদ্দিন ও মোহাম্মদ আলীর বসতবাড়িতে আগুন লেগেছে।

কাঁদতে কাঁদতে স্থানীয় সাহারা খাতুন বলেন, ছেলের জন্য বউ এনেছি মাত্র এক বছর হতে চলেছে। আগুন লেগে পুত্রবধূর বিবাহের সব মালামাল পুড়ে একেবারে ছাই হয়ে গেছে; কাপড় থেকে শুরু করে ফার্নিচার। আমরা এখন কী করব। সব তো শেষ হয়ে গেল।

স্থানীয় নবি হোসেন বলেন, রোহিঙ্গাদের বাড়ি আগুনে পুড়ে গেলে তারা এনজিও থেকে সাহায্য পায়। আমরা স্থানীয়রা পাই না। এখন আগুনে পুড়ে আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। আমরা যাদের বসতবাড়ি ক্যাম্পের মধ্যে, তারা যাবে কোথায়। আমরা অসহায় হয়ে গেছি।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, স্থানীয়দের ঘরবাড়ি পুড়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে ক্ষতিগ্রস্তদের দেখভাল করার জন্য জানানো হয়েছে। আমরা তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। বিষয়টি উপর মহলে অবগত করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. আমির জাফর জানিয়েছেন, দুপুর আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে পুড়ে গেছে দোকান, মসজিদ, ঘর, অফিস, টয়লেট ও এনজিওর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ ২৭৫টি স্থাপনা। তবে আগুনের সূত্রপাত জানা যায়নি।

প্রাথমিকভাবে একটি সূত্র জানিয়েছে, ডি-১ ব্লকের আবদুল্লাহর স্ত্রী রান্না করার সময় কড়াইয়ে থাকা তেলে পানি পড়লে আগুন ওপরে উঠে যায়। পরে পুরো ব্লকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক অতীষ চাকমা জানান, রামু ও উখিয়ার ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি এপিবিএন, বিজিবি, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।

প্রসঙ্গত, সপ্তাহখানেক আগে গেল ২৪ মে একই ক্যাম্পে আগুন লেগে অন্তত তিনশো মতো ঘর পুড়ে যায়। এ নিয়ে অনেক রোহিঙ্গাপরিবার এখনো দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

উল্লেখ্য, এর আগের দিনই (৩১ মে) রোহিঙ্গা ক্যাম্প (১৯ নম্বর) পরিদর্শন করে গেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অস্থিরতা নিয়ে তিনি সেদিন সাংবাদিকদের নানান প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।

পাঠকের মতামত

ভেসে আসলো বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ ২ মৃতদেহ, মস্তকবিহীন মিলল আরেক মৃতদেহ

           টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ ৩ জনের মধ্যে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার ...

সেন্টমার্টিন চ্যানেলে ট্রলার ডুবি, দুই উদ্ধারকারীসহ এখনও নিখোঁজ তিন

           আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার) কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনদ্বীপ যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরের শাহপরীরদ্বীপ গোলারচরের মোহনায় এফবি ...