প্রতিনিধি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে স্বাধীনতাকামী আরাকান আর্মির (এএ) সাথে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর চলমান সংঘর্ষে মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দ ফের ভেসে আসছে কক্সবাজারে টেকনাফ সীমান্ত এলাকায়।
মঙ্গলবার টেকনাফ পৌরসভা,সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ এলাকায় সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে এসেছে।
এর আগে দুইদিন বন্ধ থাকার পর আবারও গতকাল সোমবার (১৩ মে) সকাল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত থেমে থেমে টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন অংশে মিয়ানমারের ওপার থেকে মর্টারশেলের শব্দ শোনা যায়। এতে আতঙ্কে কাটছে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের।
সীমান্তের কাছাকাছি টেকনাফের পৌরসভার জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, গত দুইদিন রাখাইন রাজ্যে থেকে গোলার শব্দ পাওয়া যায়নি। কিন্তু আজ সকাল থেকে ওপার থেকে ফের ভারী গোলার বিকট শব্দ এপারে ভেসে আসছে। এতে বিশেষ করে নারী-শিশুদের নিয়ে ভয়ভীতির মধ্য রয়েছেন সীমান্তের মানুষ।
কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবারও সীমান্তের গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, সীমান্তে বসবাসকারীদের মাধ্যমে ওপারের গোলার বিকট শব্দের বিষয়ে জেনেছি। সীমান্তে ভারী গোলার বিকট শব্দ নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ আওয়াজ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।
সীমান্তের বসবাসকারী লোকজন জানান, টেকনাফ উপজেলার দমদমিয়া থেকে শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত এলাকায় সোমবার থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে মিয়ানমারের গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এতে সীমান্তবর্তী মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সাবরাং সীমান্তের বাসিন্দা আবদুল করিম বলেন, ভোর থেকে নাফ নদীর ওপার থেকে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। মনে হচ্ছে মাটি খুঁড়ে কেউ নিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত টহল বৃদ্ধি করেছে। তারা চলমান এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সবসময় প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, রাখাইনের সংঘাত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। পাশাপাশি ওপারের চলমান সংঘাতকে কেন্দ্র করে নতুন করে কোন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
পাঠকের মতামত