ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৪ ৬:৩১ পিএম

 

আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার)
কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের ২১দিন পর কুমিল্লা এলাকা থেকে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ(৬)কে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অপহৃত উদ্ধার ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ একই এলাকার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ’র ছেলে।সে পূর্ব পানখালী এলাকার আবু হুরাইরা (রাঃ) মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণীর ছাত্র।
গ্রেপ্তারকৃত অপহরনকারীরা হলেন,উভয় হ্নীলা ইউনিয়নের মুচনী রেজিস্ট্রার ক্যাম্পের বাসিন্দা নাও ডাকাতের ছেলে সাদেক (২১), মৃত আব্দুর শুক্করের ছেলে নাও ডাকাত (৫৫), মোহাম্মদ আলী স্ত্রী লায়লা বেগম (৫৫),মোহাম্মদ খানের স্ত্রী উন্মে সালমা (২৪),মৃত আব্দুর শুক্করের ছেলে মোহাম্মদ হাশেম (২৭),নাও ডাকাতের স্ত্রী আয়েশা বেগম (৩২),সাদেকের স্ত্রী হোসনে আরা (২০),নাগু ডাকাতের ছেলে রনি (১২),কক্সবাজার ঝিলংজা দক্ষিণ হাজীর পাড়ার মোঃ জাফর আলমের ছেলে মোঃ নাসির আলম (২৮),মহেশখালী মাইস্যা ঘোনা এলাকার মনছুর আলম প্র: বদন্যা ছেলে সালামত উল্লাহ প্রকাশ সোনাইয়া (৪৫),নয়াপাড়ার মৃত কালা মিয়া ছেলে জহির আহমেদ (৬৫), পশ্চিম নয়াপাড়া শামসুল আলমের ছেলে হাসমুল করিম তোহা (২০),সামিরাঘোনা এলাকার ফরিদুল আলমের ছেলে মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ (১৯),একই এলাকার মৃত রাহমত উল্লাহ ছেলে ফরিদুল আলম খান (৫২),মহেশখালী কালারমার ছড়ার সালামত উল্লাহ (সোনা মিয়া) ছেলে মোঃ আমির হোসেন ও কালারমার ছড়ার শামসুল আলমের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম তোহা।
রবিবার(৩১মার্চ)বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ মডেল থানার কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন,উখিয়া-টেকনাফ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল। এসময় উপস্থিত ছিলেন,টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি,পরিদর্শক (অপারেশন)আব্দুর রাজ্জাক,এসআই সুদর্শন,এসআই মাসুদ ফয়সাল।
ওইসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল বলেন,গত(৯মার্চ) শনিবার হ্নীলা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পূর্ব পানখালী এলাকা হতে মাদ্রাসা আবু হুরায়রার ১ম শ্রেণীর ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা অপহরণ করা হয়।তার পর থেকে ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে পরিবারের কাছে অপহরণকারীরা ২০লাখ টাকা দাবি করে আসছিল। অপহৃতের পরিবার বিষয়টি থানা পুলিশকে জানায়।পরে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ অপহরণকারীদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পেরে পুলিশের অভিযান শুরু করেন।
সর্বশেষে জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম (বার) মহোদয়ের নির্দেশক্রমে টেকনাফ মডেল থানার ওসি নেতৃত্বে শনিবার(৩০মার্চ) সন্ধ্যায় কক্সবাজার ও কুমিল্লা জেলায় বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে চাঞ্চল্যকর অপহৃত শিশু ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহসহ মুক্তিপণের ৪লাখ টাকা,অপহরণে ব্যবহৃত সিএনজি ও ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এসময় অপহরণ চক্রের মাস্টার মাইন্ড আনোয়ার সাদেকসহ ১৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,অপহরণের ঘটনায় জড়িত অপহরণ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়াধীন আছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়,আনোয়ার সাদেক, শাহীন,তোহা, নাগু ডাকাত,মধু হোসনে আরাসহ আরো অন্যান্যরা অপহরণ চক্রের সক্রিয় সদস্য। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ আদায়ের কৌশল হিসাবে মহেশখালী থানাধীন কালারমারছড়া দুর্গম পাহাড়ী এলাকা থেকে ভিকটিমের মাকে বারং বার মোবাইলের মাধ্যমে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। এমনকি মুক্তিপন না দিলে শিশুটি হত্যা করার হুমকি প্রদান করে। মুক্তিপন আদায়ের লক্ষ্যে অপহৃত শিশুকে বিভিন্ন সময় নির্মমভাবে মারধর করে ভিকটিমের মাসহ পরিবারের লোকজনদেরকে কান্নাকাটির শব্দ শোনায়।
অপহৃত শিশুর মা নুরজাহান বেগম জানান,৯ মার্চ সকালে ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ প্রতিদিনের মত টেকনাফ উপজেলার স্থানীয় আবু হুরাইরা (রাঃ) মাদ্রাসায় পড়তে যায়। দুপুরে মাদ্রাসায় ক্লাশ শেষে বাড়ীর ফেরার পথে শিশুটিকে থামিয়ে দুর্ঘটনায় মায়ের মাথা ফেটে গেছে বলে জানায় বোরকা পরিহিত অজ্ঞাত এক নারী। পরে ওই নারী শিশুটিকে ফুসলিয়ে একটি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়।এরপর থানায় লিখিতভাবে অবহিত করছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। এতে শিশুটিকে জনৈক নারীকে অটোরিকশা তুলে নিতে দেখা গেছে। পুলিশ ১০ মার্চ অভিযান চালিয়ে অপহরণ ঘটনায় ব্যবহৃত অটোরিকশার চালক ও সংঘবদ্ধ চক্রের নারী সদস্য সহ চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ৫ জনই রোহিঙ্গা। এর ধারাবাহিকতায় ২২দিনে এসে পুলিশ শিশুটি উদ্ধার ও পুরো চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১৭ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৯ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের পরিবারের শিকার তারমধ্যে ৫১ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে।

পাঠকের মতামত

ভেসে আসলো বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ ২ মৃতদেহ, মস্তকবিহীন মিলল আরেক মৃতদেহ

           টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ ৩ জনের মধ্যে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার ...

সেন্টমার্টিন চ্যানেলে ট্রলার ডুবি, দুই উদ্ধারকারীসহ এখনও নিখোঁজ তিন

           আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার) কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনদ্বীপ যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরের শাহপরীরদ্বীপ গোলারচরের মোহনায় এফবি ...