ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৪ ৩:১০ পিএম

 

আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার)
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নে পৃথক অভিযান চালিয়ে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মাদক চোরাকারবারীর অন্যতম হোতা ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু এবং আন্তঃজেলা মাদক, অস্ত্র ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারী সিন্ডিকেটের ৩ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব-১৫ এর সদস্যরা।এসময় ২ লক্ষ পিস ইয়াবা,১টি বিদেশী পিস্তল ও ২ রাউন্ড কাতুর্জ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন,উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড পূর্ব জাদিমুড়ার ইমান হোসেনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু (২১),হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকার মোঃ হোসাইনের ছেলে আবুল কাশেম (৩৮),খুলনা দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়ন গুনারি এলাকার নুরুজ্জামান (২৮) ও খুলনা সদর এলাকার আবুল কালামের ছেলে সাকির আহাম্মদ সাগর (২৬)।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও
সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া)
মোঃ আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান,গতরাতে র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার এর আভিযানিক দল র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার তথ্যের ভিত্তিত, মাদক পাচারের হাব হিসেবে ব্যবহৃত টেকনাফ উপজেলার হ্নীলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে কুখ্যাত মাদক কারবারী ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু এর মাদক সিন্ডিকেট পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বড় একটি মাদকের চালান নিয়ে হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব জাদিমুড়া এলাকায় অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল উক্ত স্থানে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার সময় পালানোর চেষ্টাকালে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মাদক চোরাকারবারীর অন্যতম হোতা ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালুকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত মাদক কারবারী তার নাম-ঠিকানা প্রকাশসহ নিজ বসত ঘরে মাদকদ্রব্য ইয়াবা আছে বলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে বিধি মোতাবেক বসত ঘর তল্লাশী করে খাটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থা থেকে সর্বমোট ২ লক্ষ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া অপরদিকে একইদিন রাতে র‌্যাব-১৫ এর টেকনাফ থানাধীন হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং এলাকায় একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় রইক্ষ্যং এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, ইয়াবা ব্যবসায়ী ও জনমনে আতংক সৃষ্টিকারী আবুল কাশেমসহ তিনজনকে গ্রেফতার এবং তাদের তল্লাশী করে ১টি বিদেশী পিস্তল ও
২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ইয়াসিন আরাফাত ওরফে কালু পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মাদক চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। সে কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মাদক চোরাকারবারীর অন্যতম হোতা। সে উক্ত এলাকায় ভয়ংকর একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তুলে এবং তার নেতৃত্বে সিন্ডিকেটের সহযোগীরা বিভিন্ন পেশার আড়ালে তাদের সুবিধামত এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট ব্যবহারের মাধ্যমে ইয়াবার বড় বড় চালান দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে এসে কয়েক দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে বসতঘরে বিশেষ কায়দায় মজুদ করতো। মজুদকৃত মাদকের চালান স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার নির্ধারিত এজেন্টদের নিকট সুবিধাজনক সময়ে বিক্রি করে থাকে। পর্যায়ক্রমে পুনরায় বিপুল পরিমাণ মাদকের চালান বাংলাদেশে নিয়ে এসে কোন না কোন অভিনব কৌশলী পন্থায় মজুদ ও বিক্রয়ের মাধ্যমে তার এই রমরমা মাদক ব্যবসার প্রক্রিয়া চলমান ছিল বলে জানা যায়। মাদকের টাকা লেনদেনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ধৃত ইয়াসিন জানায় ,পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ক্রয়কৃত মাদকের মূল্য বাবদ নগদ অর্থ প্রদান এবং কখনো কখনো হুন্ডী ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পরিশোধ করতো।
তাছাড়া গ্রেফতারকৃত আবুল কাশেম একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। সে তার আধিপত্য বিস্তারের জন্য দেশী/বিদেশী অস্ত্র-শস্ত্রের ভয়-ভীতি দেখিয়ে জনমনে আতংক সৃষ্টি, চাঁদা আদায় ও পরিকল্পিত হামলাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। একই সাথে সে দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ব্যবসা করে আসছিল। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানায়,গ্রেফতারকৃত নুরুজ্জামান ও সাকির আহাম্মদ সাগর দু’জনই অস্ত্র ব্যবসায়ী। তারা খুলনা থেকে দেশী/বিদেশী অবৈধ অস্ত্র-গোলাবারুদ নিয়ে টেকনাফ হোয়াইক্যং এর উনচিপ্রাং এলাকায় এসে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নিকট বিক্রয় করে থাকে। অস্ত্রের মূল্য বাবদ নগদ অর্থের পাশাপাশি তারা বিনিময় হিসেবে ইয়াবা ক্রয় করে খুলনায় নিয়ে যেতো এবং সেখানকার মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের নিকট বিক্রয় করতো। ধৃত নুরুজ্জামান একজন কুখ্যাত মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, চুরি ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে চট্টগ্রাম ও খুলনার একাধিক থানায় সর্বমোট ১৩টি মামলা এবং বিভিন্ন মেয়াদে আটবার কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়। এছাড়াও ধৃত সাকির আহাম্মদ সাগরের বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১টি মামলা সংক্রান্তে তথ্য পাওয়া যায়।

তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

পাঠকের মতামত

শাহপরীরদ্বীপে বসত ঘর তল্লাশী করে দেড় লক্ষ ইয়াবা উদ্ধার, আটক-১

           আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার) কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেড় লক্ষ ...