টেকনাফ প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জাপান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে আইভিওয়াই জাপান এর সহযোগিতায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মুক্তি কক্সবাজার এর বাস্তবায়নাধীন Livelihood Improvement Project এর উদ্যোগে অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মশালা ও ব্যবসার যোগসূত্র মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় টেকনাফ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে টেকনাফ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং প্রকল্প সমন্বয়কারী জনাব আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় উক্ত কর্মশালায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইভিওয়াই জাপান এর প্রজেক্ট ম্যানেজার (বাংলাদেশ) মিস রি কুন্ডু, টেকনাফ উপজেলার উপ সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জনাব হারাধন চন্দ্র সুশীল, উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জনাব এসএম শাহজাহান, এনজিও সংস্থা আনন্দ ও উত্তরণ এর প্রতিনিধি, সাংবাদিকবৃন্দ এবং প্রকল্পের ৫০ জন উপকারভোগী।
কর্মশালার শুরুতেই প্রকল্প সমন্বয়কারী জনাব আনোয়ার হোসেন চৌধুরী উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকল্পের উদ্দেশ্য, কার্যক্রম, সফলতা, শিখন ও বাধাঁ সমূহ মাল্টিমিডিয়ায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন।
পরবর্তীতে উন্মুক্ত আলোচনায় ব্যবসার যোগসূত্র স্থাপনে সংশ্লিষ্ট পক্ষ সমূহের প্রতিনিধি তথা কৃষি ও পোল্ট্রির বিভিন্ন বীজ, সার ও ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিবৃন্দ উপকার ভোগীদের সাথে যোগাযোগ সেতু তৈরীর জন্য মুক্তি কক্সবাজার ও আইভিওয়াই জাপানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান তার বক্তব্যে মুক্তি কক্সবাজার এর কাজের প্রসংশায় বলেন আমি মুক্তির কর্ম এলাকায় ভিজিট করেছি এবং উপকারভোগীদের কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে মুক্তি কক্সবাজারের অপরিসীম ভূমিকা লক্ষ্য করেছি। টেকনাফ এলাকার পিছিয়ে পড়া কৃষকদের মাঝে উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়ায় মুক্তি কক্সবাজারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পাশাপাশি আইভিওয়াই জাপানকে উক্ত প্রকল্প হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পাশাপাশি টেকনাফের অন্যান্য ইউনিয়নেও প্রকল্পের এলাকা বর্ধিতকরণের জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান।
উপ সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হারাধন চন্দ্র সুশীল বলেন হাঁস-মুরগির উন্নত জাত ও নিয়মিত টিকা প্রদানে হাঁস-মুরগির মৃত্যুহার কমানোর মাধ্যমে বর্তমানে গ্রামের মহিলারা অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হচ্ছে। মুক্তি কক্সবাজার তাদের প্রকল্পে নিয়মিত টিকা প্রদান সহ গ্রামের নারীদের হাঁস-মুরগি পালনে উন্নত কৌশল ও প্রযুক্তি পৌঁছে দেওয়ার এই উদ্যোগ খুবই প্রসংশনীয়।
উপকারভোগীর মধ্যে থেকে হ্নীলা ৭ নং ওয়ার্ডের রঙ্গিখালীর মনোয়ারা বেগম প্রকল্প সহযোগিতায় ভার্মি-কম্পোস্ট উৎপাদন, সবজি চাষ ও মুরগি পালন এবং বিক্রি করে মাটির ঘর থেকে পাকা দালান ঘর নির্মানের সফলতার গল্প শুনান।
সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন আমাদের প্রত্যেকের দুটি হাত রয়েছে এক হাতে যেমন কিছু করা কঠিন হয়ে যায় তেমনি পরিবারে নারী পুরুষ দুজনই যখন একসাথে আয় করবে তখন সংসারের স্বচ্ছলতা আনা অনেক সহজ হয়ে যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এক ইঞ্চি জায়গাও আমরা অনাবাদী রাখব না।
উপস্থিত উপকারভোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা প্রকল্প হতে প্রাপ্ত শিক্ষাকে আপনাদের কৃষি ও পোল্ট্রি পালনে যথাযত ব্যবহারের মাধ্যমে এই শিক্ষাকে সর্বস্তরের মাঝে ছড়িয়ে দিবেন। পরে তিনি টেকনাফ উপজেলার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় মুক্তি কক্সবাজারকে ধন্যবাদ জানিয়ে উক্ত কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
কর্মশালার শেষে উপকারভোগী ও প্রকল্প স্টাফরা সম্বিলিতভাবে মধ্যাহ্ন ভোজ সেরে আনন্দঘন পরিবেশে টেকনাফ সী বীচ পরিভ্রমণ করেন এবং সাংস্কৃতিক বিনোদনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
পাঠকের মতামত