ঈদগাঁও প্রতিনিধি,কক্সবাজার।
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে পারছেননা কৃষকরা। ফসলী জমি থেকে টপ সয়েল কেটে নেয়ায় নীচু হয়ে যাওয়া ধানক্ষেতে জলাবদ্ধতার ফলে পানি জমে থাকায় ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান। সাম্প্রতিক সময়ে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের সময় জেলাব্যাপী মাঝারি বৃষ্টি হয়। এ বৃষ্টির পানি জমে আছে অপেক্ষাকৃত নীচু ধানক্ষেতে। ফলে ধান পাকলেও কাটতে পারছেননা কৃষকরা। চাষী, কৃষক ও ভূমি মালিকদের সাথে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে।
জালালাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব ফরাজী পাড়ার কৃষক আবদুর রহিম বলেন, সপ্তাহখানেক আগে হওয়া বৃষ্টির পানি এখনো জমে আছে পাকা ধান ক্ষেতে। ফলে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছেনা।
ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার ভূমি মালিক আবদুল্লাহ কায়েস বলেন, প্রতি বছর ফসলী জমি থেকে টপ সয়েল কেটে নেয়ায় জমি নীচু হয়ে গেছে। তাই সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী গ্রামের গৃহস্থ হান্নান মিয়া বলেন, প্রতি বছর অগ্রাহায়ন মাসে ধানকাটার পরপরই উপজেলার ডজনখানেক ইট ভাটা একযোগে কৃষি জমি থেকে টপ সয়েল কাটতে শুরু করে। এতে জমি নীচু হতে হতে এখন প্রায় জলাভূমিতে পরিণত হয়েছে।
উপজেলার ফসলী জমির বিলসমূহের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে জালালাবাদ ইউনিয়নের ধনকা বিল। জেলার শষ্য ভান্ডার খ্যাত তিন সহস্রাধিক হেক্টর আয়তনের এ আবাদী বিলে দুই দশক আগে থেকেই বসানো হয়েছে দুটি ইট ভাটা। এ ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্হাপিত আরো ৮/১০ টি ইট ভাটার জন্য প্রতি বছর এখান থেকে মাটি কেটে নেয় টপ সয়েল লুটকারীদের সংঘবদ্ধ একাধিক সিন্ডিকেট।
গত দুই দশক ব্যাপী মাটি কাটার ধকল সইতে না পেরে এ বিলটি এখন প্রায় জলাভূমিতে পরিণত হয়েছে।
জালালাবাদ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নূরুল আলম বলেন, জমি নীচু হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার ফলে ধনকা বিলে প্রতি বছর আমন ও বুরো উৎপাদন মৌসূম পিছিয়ে যাচ্ছে। অপরিণামদর্শী টপ সয়েল কাটা বন্ধ না হলে ঐতিহ্যবাহী এ বিল ফসল উৎপাদন সক্ষমতা হারিয়ে বিরান ভূমিতে পরিণত হবে।
উপজেলা কৃষি কমকর্তা জাহিদ আহসান বলেন, ফসলী জমি থেকে টপ সয়েল কাটা ও এর ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ইতোপূর্বে বিভিন্ন মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে ব্যাবস্হা নেয়া হবে।
ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা বলেন, কেউ ফসলী জমির টপ সয়েল কাটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্হা নেয়া হবে।
পাঠকের মতামত