আলমগীর মাহমুদ::
বদনজর,বদদৃষ্টি, ‘ নজর ‘লেগেছে দিয়ে বাংলায় যারে বুঝানো হয়! শব্দগুলো অন্য অর্থবোধকতা বুঝাতেও হয় ব্যবহার। তখন এই একটি শব্দের অর্থ বুঝতে পুরো লাইন পড়া লায়।
সম্পদে জমিদারের দৃষ্টি পড়েছে। সুন্দরীর প্রতি নজর পড়েছে বখাটের ।নজরে নজরে রাখিও। বাচ্চাটির খাবারে নজর পড়েছে/ দৃষ্টি পড়েছে খেতে পারে না।
সেদিক থেকে মরদওয়ালা শব্দ চাটগাঁইয়া ‘মুখ পইজ্যে’! অত্যন্ত সরস শক্তিমান শব্দ যাহ বুঝাতে চাই সে সিটিউসেনের হাড্রেটে হাড্রেট পারসেন্ট বুঝাতে সক্ষম ধনবান শৈলীর।
চাটগাঁইয়া এই রতন ফেলে বিদেশী প্লাজুতে মনের খায়েশ মিঠেনা,সভ্যদেখাওনর লাগিয়া যদিও একের ভেতর অনেক বুঝানোর শব্দগুলো বাধ্য্ হয়ে ব্যবহার করিও, তাতে মনের খায়েশ মিঠে অর্ধেক। ফেসফেসী (মনের পুরো কথা না বলতে পারলে মনের যে অবস্থা হয় সেটি) যায় না তাই ‘মুখ পইজ্যে’
আতাউর রহমান।ঝিলংঝা বি,ডি,আর ক্যাম্প কুটিরে সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রবাস বন্ধু আবদু রহমানের মতই আমার একজন।সকালে খূঁটিনাটি সারল।পাশের বাসা থেকে জাহাঙ্গীর কাঁঠাল দিল। আতাউর রহমানকে ডেকে খেতে বই…
কাঁঠাল কেমন জানি তিতা লায়। কোঁয়ার গায়ে থেতলে দিয়েছে কে যেন অনেক আগে! পুরান জখমের কাল দাগের মতো পুরো কোঁয়া খেয়ে আক্রান্তের যেন প্রথম প্রক্রিয়া।
আতাউর রহমান বলেই যাচ্ছে ‘ অ..বদ্দা মুখ পইজ্যেদে আ..গাছটারে শেষ করে দিছে,দেখছেন তিতা, দাগ। এ কাঁঠালের বীচি রান্নায় তরকারির সাথে মিলাবে না শক্ত শক্ত রয়ে যাবে।
যে কোন কাঁঠালের খাবার পর বীচিটা পানিতে রাখতে নেই,কাঁঠাল পানসে হয়ে যায়। প্রত্যেক ফল খাবার পর গাছের জন্য দোয়া করতে হয়।তার স্বাদ, দীর্ঘজীবনের।
মুখ কেমন খারাপ জিনিস শুনেন,আমাদের বাড়ির এক গাছে প্রচুর পেঁপে ধরে। পড়শী এক মহিলা বাড়িতে এসে কয় ‘ তোমাদের বাড়িতেতো পেঁপে ধরেছে। সে বাড়ি থেকে বের হবার আগে সব ঝরে পড়ে যায়।রান্না করলে তিতা তিতা।
একদিন আমরা কামলা গেছি। বড় জলপাই গাছ উপরে উঠার সাধ্য্ নাই।বৃদ্ধ এক লোক হেঁটে যাবার কালে জলপাই খেতে না পারার আলোচনাটা শুনে ফেলে ‘ বুড়া ডাক দিয়ে কয় জলপাই খাবি নিকি!
সবাই অয় অ জ্যেড়া। বুড়ো গাছের দিকে তাঁকিয়ে শুধুই কইল ‘ এ ন গরি ক্য্যন জলপাই ধরিত পারেদে আ…বলার সাথে সাথেই একটা ডাল আজগুবী ভাবে ভেঙ্গে পড়ে! আমরা সবাই দৌড়েঁগেলাম খাবার সাধ্য নাই তিতা কি তিতা…
বিজ্ঞানেরে এতকিছু বিশ্বাসে আনাওন গেল মগর দৃষ্টির যে বদশক্তি তারে কখনও বিশ্বাস করানো গেল না। সে যেন আজো অবেলার বেলাই রয়ে গেল…
লেখক:– বিভাগীয় প্রধান।সমাজবিজ্ঞান বিভাগ।উখিয়া কলেজ।কক্সবাজার।
[email protected]
পাঠকের মতামত