আজো থেমে থেমে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এপারের মানুষের মাঝে আতংক কাটছে না কোন ভাবে। ঝুঁকির কারণে সীমান্তের ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী উপস্থিতি অনেকাংশে কমে গেছে এমনটি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে গত কয়েকদিনের সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে বর্ডার গাড ব্যাটালিয়ন(বিজিবি)।
স্থানীয়রা বলেন, দ্রুত এ সংকট দুর করতে দ্রুত ব্যবস্হা নিতে হবে।
আজ রবিবার সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ১৮টি গুলির শব্দ শোনা গেছে। সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকজন দ্রুত তাদের নিকট আত্নীয় স্বজনের বাড়ি চলে যাচ্ছি।
তুমব্রু বাসিন্দা মাহামুদুল হাসান বলেন, গোলাগুলির শব্দ শুনেছি।তবে সাধারন মানুষের চলাচল সীমিত।
স্হানীয়রা বলেন, টানা ১মাসের চেয়ে বেশি মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও স্বাধীনতার কামি আরাকান আর্মি সাথে যুদ্ধ চলে আসছে। গত কয়েকদিনে মিয়ানমারের আচরন ভাল লাগেনি। তাঁরা গায়ের উপর উঠে যুদ্ধ করতে চায়।
তুমব্রু বাসিন্দা ছালেহা বেগম ও খুরশিদা বেগম বলেন প্রতিদিন গোলার শব্দে আতংকে দিন কাটাচ্ছি। মাঝে মাঝে মিয়ানমারের বিমান দেখা গেছে।
বাংলাদেশ -মিয়ানমারের সীমাান্তের জিরো পয়েন্টে অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গার বসবাস। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচবছর আগে ওয়ালিদং পাহাড়ের পাদদেশে এই রোহিঙ্গা ক্যাম্পটি গড়ে তোলা হয়।
গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকার একটি অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না,শান্তিপূর্ণ ভাবে সমস্যার সমাধান করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
রবিবার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী সালমা ফেরদৌস।
এতে স্থানীয় প্রতিনিধি,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিজিবি সহ অন্যান্য উপস্থিত ছিলেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে গোলাবর্ষণে প্রাণহানির ঘটনায় ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে আবারও তলব করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে এক মাসের মধ্যে চতুর্থ দফায় তলব করা হয় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে।
নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু কোনারপাড়া সীমান্তে শুক্রবার রাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া চারটি মর্টার শেল এসে পড়ে। এতে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক যুবক নিহত হন। আহত হন রোহিঙ্গা শিশুসহ পাঁচজন।
এর আগে, বাংলাদেশের মধ্যে মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার শেল পড়লে রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এনে প্রতিবাদ করা হয়। কিন্তু এরপরও মিয়ানমার সীমান্তে মর্টার শেল ছোড়া অব্যাহত রেখেছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার ভূখণ্ডে থেকে ছোড়া একটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় এসে পড়ে। তার আগে, ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে।
গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমার থেকে ছোড়া দুটি মর্টারশেল বান্দরবানের ঘুমধুম এলাকায় এসে পড়ার ঘটনায় পরদিন ২৯ আগস্ট দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানায় বাংলাদেশ।
ওই সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে আমরা ডেকেছি।একটা মৌখিক নোটের মাধ্যমে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে।
পাঠকের মতামত