
উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ফেলা বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে কয়েকশ’ একর জমির ধান ও শাকসবজি। এতে প্রতি বছর জীবিকা হারাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। তাদের দাবি, গত দুইদিনের বছরের প্রথমে অল্প বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে নষ্ট হয়েছে প্রায় ২০ একরের বেশি জমির পাকা ধান। কিন্তু সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ তাদের। তবে খালগুলো সংস্কারের আশ্বাস দিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।উখিয়া উপজেলার কুতুপালং কৃষক মোহাম্মদ আলী জানান, চলতি মৌসুমে মাছকারিয়া বিলে আমি ৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছি। ধান পাকতে শুরু করেছে এমন সময় অল্প বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে ফসল গুলো তলিয়ে গেছে।
একই কথা বলেন, আব্দুল মজিদ নামের আর এক কৃষক। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য আসা বন্ধ না হলে এলাকার কৃষকরা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দ্রুত এর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী তার।
কুতুপালং লম্বাশিয়া এলাকার কৃষক রাশেদ ও আহমদ উল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছর বর্ষা ও ব্যুরো মৌসুমে ধান চাষ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। রোহিঙ্গা আসার পর থেকে একবারও ভালো মতো ফসল ঘরে তুলতে পারিনি। একটু বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পের বর্জ্য এসে ফসল গুলো নষ্ট হয়ে যায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য আসা বন্ধসহ খাল খননের দাবী করেন তারা।
লম্বাশিয়া এলাকার কৃষক মোহাম্মদ সালাম চলতি মৌসুমে ৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছেন। ফসলও ভালো হয়েছিল। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে শেষ করে দিয়েছে জমির পাকা ধান। তার আক্ষেপ অভিযোগ করেও কোন ধরণের ক্ষতিপূরণ বা সমাধান পান নি।
স্থানীয় অনেকের অভিযোগ সামান্য বৃষ্টিতে ক্যাম্পের নালা উপচে ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ছে মানববর্জ্য। সে সঙ্গে আছে প্লাস্টিক, পলিথিন ও মেডিকেল বর্জ্য। এ কারণে হুমকিতে জমির ধান আর সবজি ক্ষেত। অনেক জমিতে বর্জ্য জমে পচে যাচ্ছে ধান। এভাবে প্রতি বছর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে চরম লোকসানে পড়তে হচ্ছে এখানকার কৃষকদের।
প্রশাসনকে জানিয়েও সমস্যার সমাধানে কিংবা কৃষকদের ক্ষতিপূরণে কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি বলে জানান, রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, আমাদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বর্জ্য আসা বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া ড্রেন নির্মাণ ও খালগুলো সংস্কার করতে হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের আওতায় আনতে হবে।
একই দাবী করেছেন রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর শাহেদুল ইসলাম রোমান।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা হয় প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের খাল গুলো খনন ও সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) একটি ফান্ডিং করেছে। শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে।
স্থানীয় কৃষক ও জনপ্রতিনিধিদের দাবি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে উখিয়া উপজেলায় ৫০০ একরের বেশি ফসলি জমি ও সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
####
পাঠকের মতামত