
সিএসবি২৪ ডেস্ক:
ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা, অকটেন ৪৬ টাকা এবং পেট্রলের দাম ৪৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫% বেড়ে হয়েছে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা। পেট্রলের দাম ৫১.১৬% বেড়ে প্রতি লিটারের দাম হয়েছে ১৩০ টাকা। অকটেনের দাম বেড়েছে ৫১.৬৮%, প্রতি লিটার কিনতে গুনতে হবে ১৩৫ টাকা।
বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণ উল্লেখ করে দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার (গতকাল) রাত ১২টার পর থেকে নতুন এই দর কার্যকর করা হয়েছে। গতকাল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এদিকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির খবরে গতকাল রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে বাইক চালকরা ছুটে গেছেন ফিলিং স্টেশনে। কিন্তু এর আগেই অধিকাংশ পেট্রল পাম্প বন্ধ করে দিয়েছে মালিক কর্তৃপক্ষ। তেল না পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পেট্রল পাম্পগুলোর সামনে বিক্ষোভও করেন অনেকে। গত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন পেট্রল পাম্প ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাইক চালকদের অভিযোগ, তেলের মূল্যবৃদ্ধির খবরে কর্তৃপক্ষ পাম্প বন্ধ করেছে যাতে করে রাত ১২টার পর থেকে অতিরিক্ত দামে তেল বিক্রি করতে পারে। সিন্ডিকেট তৈরির চেষ্টা করছে তারা। তবে স্টেশন মালিকরা বলছেন, আনলোড করার জন্যই স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছে।
রাত সাড়ে ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বন্ধ পাম্পগুলো তেল সরবরাহ শুরু করেনি।
মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈশ্বিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ও ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে (ইআরএল) পরিশোধিত এবং আমদানিকৃত ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রলের মূল্য সমন্বয় করে ভোক্তা পর্যায়ে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
শুক্রবার (গতকাল) রাত ১২টার পর থেকে ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের ভেতর ভোক্তা পর্যায়ে খুচরামূল্য ডিজেল প্রতি লিটার ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রল ১৩০ টাকায় বিক্রি হবে।
প্রসঙ্গক্রমে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির চিন্তা করেনি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা অ্যাডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনর্বিবেচনা করা হবে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত ২২ মে ২০২২ তারিখ থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রল লিটার প্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে যা অদ্যাবধি বিদ্যমান রয়েছে। এ মূল্য বাংলাদেশি টাকায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা। (১ রুপি = গড় ১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্রল লিটারপ্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বিগত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রয়ে (সব পণ্য) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখাতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীতে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা
পাঠকের মতামত