নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের বাইরে দীর্ঘ সাত বছর ধরে সিআইসি কর্তৃক ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি বিনা ভাড়ায় জোর পূর্বক দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গফুর উল্লাহ নামে স্থানীয়দের জমি দখল ও মার্কেট উচ্ছেদ এবং নুরুল হক নামে এক যুবকের ফার্মেসীর ঔষুধ পুড়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন ক্যাম্পের সিআইসি’র বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা গেছে।
এই ঘটনায় স্বত্ব সাব্যস্থে গৃহ উচ্ছেদ পূর্বক খাস দখলের মামলা করেছেন মমতাজ বেগম। সে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং এলাকার মৃত হাকিম আলীর মেয়ে। যার মামলা নং- অপর ১০৯/২০১৩ইং। মামলায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, আরআরআরসি অফিসের অফিসার ইনচার্জ, কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জকে বিবাদী করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ১নং তফসিলে বর্ণিত আরএস ৩৪০ নং খতিয়ানের ৪৭৩৮ দাগের জমি সেকান্দর আলীর রায়তী স্বত্বীয় জমি ছিল। তৎমতে আরএস খতিয়ান প্রচার আছে। তৎপরবর্তী বিএস দাগ সৃজনে হাকিম আলীর নামে উখিয়া মৌজার বি.এস ৯১৬ নং খতিয়ান চুড়ান্ত ভাবে লিপি ও প্রচার আছে। যার ফলে খাজনা আদায় পূর্বক তামাদির উর্ধ্বকাল যাবত ভোগ দখলে রত ছিলেন। পরবর্তীতে হাকিম আলী মৃত্যুবরণ করিলে বর্ণিত মি আপোষমতে বাদীনি প্রাপ্ত হন। জমাভাগ খতিয়ান ১১৪৪নং সৃজন করে খাজনা আদায় করে ভোগ দখলে নিয়ত ছিলেন।
তবে বিবাদী তপশীলে বর্ণিত কিছু জমি দীর্ঘদিন ধরে জোর দখল করে রেখেছে। কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ না দিয়ে সেখানে জোরপূর্বক সেমি: পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। যা অপসারণ আবশ্যক বলে জানান বাদীপক্ষ।
পরবর্তীতে উখিয়া উপজেলা ভূমি অফিসের এক জরিপে ৭০১৯ দাগের মধ্যে বর্তমানে রিফিউজী হেলথ ক্লিনিক ডরমেটরী রয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। যে দাগটি ব্যক্তি মালিকানা ভুমি বলে উন্নয়ন কর ছাড়া সরকারের কোন স্বার্থ জড়িত নাই মর্মে নিশ্চিত করেন উখিয়া উপজেলা ভূমি অফিস।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, বাদী আমার ফুফু হয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সামনে তাদের স্বত্ত্ব রয়েছে জানি। তবে সিআইসি অফিসের সাথে জমি নিয়ে বিরোধের বিষয়টি জানিনা।
একাধিকবার যোগাযোগ করেও ফোন রিসিভ না করায় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত এবং অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছুদৌজা’র বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে কুতুপালং রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ বলেন মো: সায়েদ ইকবাল বলেন, জায়গাটিতে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়নি। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হলে স্টাফদের থাকতে সমস্যা হয়, সে জন্য পুরাতন শেডটি ত্রিফল দিয়ে সংস্কার করা হচ্ছে। তিনি এও বলেন, বিরোধীয় জায়গাটি দখলমুক্ত করার নির্দেশনা পেলে তা ছেড়ে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসাইন সজীবের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তবে ক্ষতিগ্রস্থপক্ষ যদি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আসেন তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
পাঠকের মতামত