একটি ব্রিজের অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয় ৫ গ্রামের আদিবাসিরা
প্রকাশ: ২০১৮-০৭-০৫ ২০:৫৫:০৭ || আপডেট: ২০১৮-০৭-০৫ ২০:৫৫:০৭

নির্মল বড়ুয়া মিলন, রাঙামাটি :: রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সদর উপজেলা সদর উপজেলার পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ড মুল রাঙামাটি শহর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দুরে ভেদ ভেদী জেলা আনসার এডজুটেন্টের কার্যালয়ের পিছনে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের উত্তর প্রান্তে কর্ণফুলি হ্রদের কারণে র্দীঘ ৪৭ বছর ধরে আদিবাসিদের নদী পারাপরের জন্য জোড়াতালি দেয়া কাঠের একটি সাঁকো এক মাত্র ভরসা । এই কাঠের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হন ৫ গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ।
স্বাধীনতার ৪৭ বছর অতিবাহিত হলেও ৫ গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের ছোট হ্রদের নদী পারাপারের জন্য আজও কোনো সেতু নির্মাণ হয়নি। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে আদিবাসি কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ।
এখানে ৫টি বৌদ্ধ বিহার, রাঙামাটি পৌরসভা বেসরকারী ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কাটাছড়ি সরকারি ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ভৌগলিক কারনে সদর উপজেলার বিলবেষ্টিত রাঙামাটি পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের অবহেলিত জনপদের মধ্যে , উলুছড়া,আলুটিলা,নোয়াআদাম,কাটা
বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে বছরের বেশির ভাগ সময় ধরে বন্যার পানি চার দিকে থই থই করে। তখন পারিবারিক প্রয়োজনে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় জরাজীর্ণ কাঠের সাঁকো অথবা ভাড়ায়চালিত নৌকা। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই হ্রদের পানি কমতে থাকায় পানি-কাদায় একাকার হলেও হেঁটেই উলুছড়া,আলুটিলা,নোয়াআদাম,কাটা
কাপ্তাই হ্রদের নাব্যতা সঙ্কটের কারণে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় ভেদ ভেদী আনসার ক্যাম্প নামক স্থানে নদী পারাপারের জন্য একটি কাঠের সাঁকোর উপরই ভরসা করতে হয়। রাঙামাটি পৌর এলাকার ওই গ্রামগুলোতে আনারস, কাঠাল,লিচু, লেবু,কলা,হলু
এ ব্যাপারে উলুছড়া এলাকার কারবারী রবিধন চাকমা সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, আমরা আদিবাসিরা যুগ যুগ ধরে জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে এই নদী হয়ে আসছি। বছরের পর বছর ধরে কৃষি পণ্যের নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
এ বিষয়ে ভেদ ভেদী জুনিয়র হাই স্কুলের ৯ম শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রী স্বপ্না চাকমা বলেন, আমাদের এ গ্রামে কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতাল নেয়া অনেক কষ্ট হয় এই গ্রামে ভালো মানের কোন ডাক্তারও নেই। গ্রামে মধ্য রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা গর্ভবতীদের নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়, এমনকি আগুন লাগলে বা বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে।আইন শৃংখলা বাহিনী পৌঁছাতে কয়েক ঘন্টা সময় লাগে তাই এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি আমাদের দীর্ঘ দিনের। এ দাবি কেউ বাস্তবায়িত করেনি। যার জন্য এলাকাবাসীকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই জরুরি ভিত্তিতে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এ দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে।
আলুটিলা গ্রামের অসিম চাকমা জানান, ভেদ-ভেদী আনসার ক্যাম্পের পিছনে কর্ণফুলি নদীর ওপরে একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি হলেও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় জনগণ অনেক কষ্টে আছে। জনসাধারণের স্বার্থে সেতু নির্মাণের জন্য ২৯৯- আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার,৩৩৩-ম-৩৩ আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুসহ সংশ্লিষ্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, জেলা পরিষদ ও রাঙামাটি পৌরসভার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কামনা করছি।